কয়েকদিন আগে বিদেশ থেকে শান্তিনিকেতনে ফিরেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। এখন তাঁর সঙ্গে বহুদিন ধরে জমি নিয়ে সমস্যা চলছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের। তার মধ্যেই এবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে চাঁচাছোলা ভাষায় মন্তব্য করলেন অমর্ত্য সেন। যা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে বেশ অস্বস্তির বিষয়। এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা যে ক্রমাগত খারাপই হচ্ছে সে কথাও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী–অধ্যাপকদের সঙ্গে আলোচনায় ‘প্রতীচী’তে বসে এভাবেই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।
এদিকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ড নিয়ে তাঁকে জানান ছাত্রছাত্রী থেকে দেখা করতে আসা অধ্যাপকরা। আর তা শুনেই তিনি বলেন, ‘শান্তিনিকেতনের পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। এখন যে পথে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এগোতে চেষ্টা করছেন সেটা সহজ নয়। কেন কর্তৃপক্ষকে সকলে দোষারোপ করছেন? আসলে বিশ্বভারতীর অবস্থা খারাপ হচ্ছে। আর কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হচ্ছেন। এখন এখানে আমরা সবাই রাজা, রাজার রাজত্বে। রাজনৈতিক হিংসা চরিতার্থ করতেই বিশ্বভারতী নানা কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। সকলের আত্মচেতনা জাগ্রত করতে হবে।’
অন্যদিকে এখনও অমর্ত্য সেনের সঙ্গে জমিজট কাটেনি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। তার মধ্যেই এমন বিস্ফোরক মন্তব্য তাঁর উপর চাপ বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাঁকে আবার অপমান করতে পারে বিশ্বভারতী। কারণ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেই নানা অভিযোগ রয়েছে। আর অমর্ত্য সেনের তির সেদিকেই। তাই পাল্টা অপমানজনক আক্রমণ হতেই পারে। এই কথা সবাই তাঁকে জানান। তখন তিনি সপাটে বলেন, ‘আমাকে অপমান করা এত সহজ কাজ নয়। অপমান যতই আসুক, সেটা গ্রাহ্য করা আমার উপরই নির্ভর করে। শান্তিনিকেতনে সাত বছর বয়স থেকেই পড়াশোনা করে আমি মানুষ হয়েছি। কে কী বললেন সেটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়।’
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য প্রাক্তন বিচারপতি, ভেলকি রাজ্যপালের
আর অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে কী বলছেন? কেন্দ্রীয় সরকার এখন ইউনিয়ন সিভিল কোর্ট আইন গোটা দেশে কার্যকর করতে চাইছে। এই বিষয়ে তাঁর কাছে সবাই জানতে চান। নোবোলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের কথায়, ‘কঠিন জিনিসকে জোর করে অপ্রতিষ্ঠিতভাবে সহজ করার প্রচেষ্টা হচ্ছে। আমাদের মধ্যে নানা পার্থক্য থাকতে পারে। ইউনিফর্ম নিয়ে আমরা তো হাজার বছর আছি। হিন্দুরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগই কেন্দ্রের আসল অ্যাজেন্ডা। হিন্দু রাষ্ট্র ভারতবর্ষে এগিয়ে নিয়ে যেতে নয়, হিন্দুধর্মকে অপব্যবহার করার চেষ্টা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধেই সকলের চেতনা জাগ্রত করতে হবে।’