পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের দামামা অমিত শাহ নিজে এসেই বাজিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। তাই আর সময় নষ্ট না করে রাজ্য বিজেপি’র রাশ কার্যত নিজেদের হাতে তুলে নিল দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে আগামী ৩০ নভেম্বর অমিত শাহের ফের রাজ্যে আসার সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে বিশেষ সূত্রে। মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির পাঁচটা সাংগঠনিক জোনের দায়িত্ব দেওয়া হল পাঁচজন কেন্দ্রীয় নেতাকে। ওই পাঁচ নেতা ১৮ নভেম্বর থেকে দফায় দফায় বৈঠক করবেন বাংলায়। সেই রিপোর্ট যাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পর আবার ৩০ নভেম্বর রাজ্যে আসতে পারেন অমিত শাহ।
রিপোর্টের পর্যালোচনার পর এই মাসের ৩০ তারিখ তিনি ফের আসতে পারেন। যদিও সময়সূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। দুর্গাপুজোর পর গত ৫ এবং ৬ নভেম্বর দু’দিনের বঙ্গ সফরে এসে রাজ্য বিজেপিকে একুশে লড়াইয়ের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে দিয়েছিলেন অমিত শাহ। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, কালীপুজোর পর ফের আসবেন। মঙ্গলবার হেস্টিংসের দলীয় কার্যালয়ে রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। সেখানে রাজ্য বিজেপি’র সাংগঠনিক পরিস্থিতির চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়। কোন কেন্দ্রীয় নেতাকে কোন জোনের ভার পাবেন, তাও চূড়ান্ত করে ফেলা হয় মঙ্গলবারের বৈঠকে।
মঙ্গলবার বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য কলকাতায় রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠকে সেসব দায়িত্ব বণ্টন করে দিয়েছেন। অমিত শাহ বাংলা সফরে এসে সব থেকে বেশি জোর দিয়েছিলেন সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির উপর। দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়দের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে তাঁর স্পষ্ট বার্তা ছিল, বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে দ্রুত সংগঠনকে মজবুত করে ফেলতে হবে। তাই টেক স্যাভি অমিত মালব্যকে এই রাজ্যের সহকারী পর্যবেক্ষক করে পাঠিয়ে বড় চমক দিয়েছিলেন অমিত শাহ। এবার সুনীল দেওধরদের মতো সাংগঠনিক নেতাদের বাংলায় পাঠিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, বাংলা দখল করতে তাঁরা কতটা মরিয়া।
আগামী ১৮ থেকে ২০ নভেম্বরের মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলাগুলির গেরুয়া শিবিরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে সেখানে দলের পরিস্থিতি বুঝে, বিবেচনা করে রিপোর্ট পাঠাবেন দিল্লিতে। সূত্রের খবর, অমিত শাহ নিজে সেসব রিপোর্ট দেখবেন খতিয়ে। তারপর ফের নতুন কোনও পরিকল্পনা নিয়ে তিনি রাজ্যে আসতে পারেন ৩০ নভেম্বর। অমিতের সঙ্গে বঙ্গ সফরে এসেছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিএল সন্তোষও। বিহারে এনডিএ জোটের জয়ের নেপথ্য কারিগর এই সন্তোষই। এবার ফের বাংলায় চলে এলেন তাঁরা। তাৎপর্যপূর্ণ হল, দলের কোনও সাংগঠনিক পদে না থাকা সত্ত্বেও মঙ্গলবার সাংগঠনিক বৈঠকের জন্য দিল্লি থেকে উড়িয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তকে। রাজ্য নেতাদের উপর ভরসা রাখতে না পেরেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।