তারিখটা ছিল ১১ অগস্ট ২০২২। সিবিআই গ্রেফতার করেছিল বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। নিচুপট্টির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তারপর কেটে গিয়েছে ৩২৩ দিন। তারপর আসানসোল থেকে ইডি গ্রেফতার করে তিহাড় জেলে নিয়ে যায়। সুতরাং জেল হেফাজতেই রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। আজ, শুক্রবার অনুব্রত মণ্ডলকে যে কোনও শর্তে জামিন দেওয়া হোক বলে আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ। কিন্তু জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায় কেষ্টর।
এখন পঞ্চায়েত নির্বাচন এসে গিয়েছে। আগামী ৮ এপ্রিল রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। এবার প্রথম অনুব্রত মণ্ডল পঞ্চায়েত নির্বাচনে অনুপস্থিত থাকবেন। আজ, শুক্রবার নেটওয়ার্ক সমস্যা থাকায় ভার্চুয়াল শুনানি হল না। তবে অনুব্রত মণ্ডলের হয়ে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। এদিন আদালতে তিনি বলেন, ‘আমার মক্কেল ১১ অগষ্ট ২০২২ থেকে জেলে বন্দি। এখনও পর্যন্ত পাঁচটি চার্জশিট জমা পড়েছে। কবে নাগাদ ট্রায়াল শুরু হবে জানা যাচ্ছে না। তাই আমার মক্কেলকে যে কোনও শর্তে জামিন দিন।’
তারপর ঠিক কী ঘটল? অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীর এমন আবেদন দেখে তেড়েফুঁড়ে ওঠেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। এবারও অনুব্রতর বিরুদ্ধে প্রভাবশালী তত্ত্ব খাঁড়া করে জামিনের বিরোধিতা করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী জয় কিষান। তিনি পাল্টা আদালতকে বলেন, ‘অনুব্রত মণ্ডল ভীষন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তদন্ত এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলছে। এই মুহূর্তে তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হলে সাক্ষীদের প্রভাবিত করা হতে পারে।’ তখন অনুব্রতর আইনজীবী পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘ভিন রাজ্যে জেলবন্দি আছেন অনুব্রত। ওখানে থেকে বসে কী প্রভাব খাটানো সম্ভব?’
আরও পড়ুন: ‘একজন সাংসদের মুখে এই ভাষা আশা করা যায় না’, সৌমিত্রকে ভর্ৎসনা কলকাতা হাইকোর্টের
বিচারক ঠিক কী বললেন? দু’পক্ষের সওয়াল–জবাব শুনে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘২৮৩ জন সাক্ষীর বয়ান নেওয়া হয়েছে। আর কত লাগবে?’ তখন সুশান্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘নতুন তথ্য প্রতিনিয়ত উঠে এসেছে। তাই আরও কয়েকজন সাক্ষীর বয়ান দরকার।’ পাল্টা বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী বলেন, ‘আর কতদিন ধরে তদন্ত চলবে?’ জবাবে তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য জানান, খুব দ্রুত শেষ হবে। জামিন খারিজ করে বিচারক জানান, পরবর্তী শুনানি ১৪ জুলাই।