এবার আর গুড় বাতাসা এবং চড়াম চড়াম ঢাক পিটিয়ে বিধানসভা ভোটে জয়লাভ করা যাবে না। এটা বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কথা নয়। বরং এটা তাঁকে শুনতে হয়েছে। যাঁর হাঁকডাকে বাঘে–হরিণে একঘাটে জল খায় তাঁকেই কিনা চ্যালেঞ্জের মুখ পড়তে হল! হ্যাঁ, প্রার্থী বদল না করলে তাঁর বুথে তৃণমূলের ভোট শূন্য হবে বলে জেলা তৃণমূলের সভাপতির কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন এক বুথ সভাপতি। নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের অঞ্চলভিত্তিক বুথকর্মী সম্মেলন হয়। সেখানেই এমন আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন পাইকপাড়া অঞ্চলের বসন্ত গ্রামের বুথ সভাপতি আবুল হাসনাত।
বছর ঘুরলেই এই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। এবার নির্বাচনে টাফ ফাইট হবে তৃণমূল–বিজেপি’র মধ্যে। আর তৃণমূলনেত্রী অনুব্রতর উপর অগাধ আস্থা রেখেছেন। সেখানে এমন তথ্য উঠে আসায় বিষম লেগেছে মাথায় অক্সিজেন না যাওয়া ব্যক্তিটির। অনুব্রত মণ্ডল বসন্তপুর গ্রামের বুথ সভাপতিকে প্রশ্ন করেন, ‘এবার জয়ের ব্যবধান কি আরও বাড়বে? জবাবে বুথ সভাপতি বলেন, ‘প্রার্থী বদল না করলে আমরা শূন্য হয়ে যাব। আর বদল করলে বিরোধীরা শূন্য হয়ে যাবে।’ তখন কঠিন অঙ্কের মুখে পড়ে যান অনুব্রত।
অনুব্রত ঢোঁক গিলে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাইকপাড়া অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য সুপারিশ করব। আমি বিধায়ক বা সাংসদ নই। অনুরোধ করা ছাড়া আমার কিছু করার নেই।’ পরে সাংবাদিকদের হাসনাত জানান, বিধায়ক মইনুদ্দিন সামস প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেবেন। অথচ ভোটের পরে গ্রামে যাননি। আজও গ্রামের মানুষ জলকষ্টে ভুগছেন।’
এদিন সভার শুরুতে অঞ্চল ও বুথের সভাপতিদের ধরে ধরে লোকসভার ফলাফল খারাপ হল কেন তা জানতে চান জেলা সভাপতি। কুরুমগ্রাম অঞ্চলের ২৩টি বুথের মধ্যে ১৪টিতে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। ১২৮ নম্বর বুথে তৃণমূল ৫২৯ ভোটে বিজেপি’র কাছে পিছিয়ে। তা নিয়ে অনেককে ভর্ৎসনা করেন অনুব্রত।
এই পরিস্থিতির কথা জানতে পেরে বিজেপি’র জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, ‘আগে জেলা সভাপতি ও নেতাদের ভয়ে চুপ করে থাকতেন কর্মীরা। এখন তাঁরা প্রশ্ন করছেন। এই প্রতিবাদী বুথ সভাপতি ও কর্মীদের তৃণমূল বহিষ্কার করলে বিজেপি’র দরজা খোলা আছে।’