আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকে আবার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একশো দিনের কাজ থেকে শুরু করে পিছড়ে বর্গের ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তির টাকা—সবই আটকে রেখেছে কেন্দ্র বলে অভিযোগ মমতার। তাই বৃহস্পতিবার টাকা না পেলে বুঝে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। একশো দিনের কাজ–সহ ১১টি প্রকল্প খতিয়ে দেখতে জানুয়ারি মাসেই রাজ্য়ে আসছেন কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা। ইতিমধ্যেই সে কথা জানিয়ে নবান্নকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বা আবাস প্লাস, মিড ডে মিল প্রকল্পের কাজকর্ম এখন খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় দল। সেটা নিয়েই আজ তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই কেন্দ্রীয় দল পাঠানো রাজনৈতিক উদ্দেশে বলে মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই এদিন আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর তোপ, ‘কারও বাড়িতে একটা চকোলেট বোমা ফাটলেও এনআইএ পাঠাচ্ছে। আর বিএসএফ যখন গুলি করে মানুষ মারে তখন তো কেন্দ্রীয় দল আসে না। উত্তরপ্রদেশে যখন মেয়েদের উপর অত্যাচার হয়, তখন কতজনকে পাঠাও? খালি কুৎসা আর অপপ্রচারের রাজনীতি। রাজ্য থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া টাকাই কেন্দ্রীয় সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রেখেছে’।
এদিকে একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে এদিন আবার সরব হতে শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। আগেও একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী একশো দিনের প্রকল্পের বকেয়া টাকা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। আজ অভিযোগের সুর পাল্টে কেন্দ্রকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেখতে চাই কদিন এটা চলে। আমি ভিক্ষে করব না। আমি ভিক্ষে করার লোক নই। কেন্দ্রের কাছে ভিক্ষে চাইতে যাব না। গোটা বিষয়টি দেখব তারপর বুঝে নেব।’ গত ১৩ তারিখ নবান্নকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে ১১টি প্রকল্পের অগ্রগতি দেখতে ফিল্ড ভিজিজ করবেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। এই ১১টির মধ্যে রয়েছে–একশো দিনের কাজ, দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল্যা যোজনা, গ্রামীণ সড়কের উন্নয়ন, ডিজিটাল ল্যান্ড রেকর্ড–সহ একাধিক প্রকল্প।
অন্যদিকে প্রশাসনিক সভামঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আপনারা হয়ত দুঃখ পাবেন। কেন্দ্র আমাদের সব ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছে। ৬ হাজার কোটি টাকা আমরা পাই। একশো দিনের কাজে আমরা টাকা পাইনি। রাজ্যের টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছ। নেতারা এসে বলে সব দিল কে? মাছের তেলে মাছ ভাজা। রাজ্য সরকার ট্যাক্স কালেকশন করে না। কেন্দ্র করে। করের ৬০ শতাংশ টাকা আমাদের দেওয়ার কথা। আমাদের টাকাই আমাদের দিচ্ছে না। বাংলার বাড়ির টাকা দেয়নি। আমরা অভিযোগ পেয়ে ১৭ লক্ষ নাম বাদ দিয়েছি। ১১ লক্ষের বাড়ি তৈরি করা হবে। যদি কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না দেয়, আমরা বুঝে নেব। সব জায়গায় দেখবেন ওঁর মুখ। উনি খেতে দিয়েছেন, উনি রেশন দিয়েছেন। ছবি তখনই টাঙানো যায়, যাঁকে মানুষ শ্রদ্ধা করে।’