লকডাউনের জেরে গত ৪৫ দিন বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যেই কাটছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে আর্থিক অবস্থা, কাজের চাপ-সহ বিভিন্ন কারণে ক্রমশ মানসিক অবসাদ বাড়ছে। সেই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে কাউন্সেলিং শুরু করল রাজ্য সরকার।
রাজ্যে এতদিন শুধুমাত্র করোনা আক্রান্ত রোগী এবং আক্রান্ত সন্দেহে যাঁদের কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে অথবা বাড়িতে রাখা হয়েছে, তাঁরা কাউন্সেলিংয়ের সুবিধা পাচ্ছিলেন। এবার থেকে রাজ্যের প্রত্যেক মানুষের কাছে কাউন্সেলিংয়ের পথ খুলে দেওয়া হল বলে জানান স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা। তিনি বলেন, ‘আগে আমরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত ও কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে থাকা মানুষের কাউন্সেলিং শুরু করেছিলাম। এখন আমরা সব মানুষের জন্য এই পরিষেবা চালু করেছি। তাঁরা ফোনে মনোবিদের পরামর্শ নিতে পারবেন।’
প্রতিদিন সকাল ১১ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ মিলবে। ফোনেই মনোবিদরা বিভিন্ন পরামর্শ দেবেন। সেজন্য় দুটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। সেগুলি হল - ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২ বা ০৩৩-২৩৪১২৬০০। এই নম্বরে ফোন করে নিজের জন্য একটি সময় বুক করতে হবে। তারপর সেই সময়মতো ফোন করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা মহিলা মনোবিদের পরামর্শ নিতে পারবেন।
করোনা পরিস্থিতিতে যেভাবে মানসিক অবসাদ-চাপ বাড়ছে, তাতে রাজ্যের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন মনোবিদরা। কলকাতার একটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ক্লিনিক্যাল মনোবিদ কস্তুরী ঠাকুর জানান, করোনা ভীতির ফলে মানুষের মনে উদ্বেগ, চাপ এবং নিরাপত্তাহীনতা অত্যধিক বেড়েছে। ইনফরমেশন ওভারলোডের (মাত্রাতিরিক্ত তথ্য) ফলে আগে থেকে মানসিক চাপ থাকা ব্যক্তিরা ভীতি অনুভব করছেন। তাই গৌণ মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের বিপদ থেকে বাঁচাতে শীঘ্র সাইকোলজিক্যাল ক্রাইসিস ইন্টারভেনশনের প্রয়োজন। অর্থাৎ দীর্ঘকালীন মানসিক ট্রমা আটকাতে জরুরি ভিত্তিতে সাহায্য করতে হবে। তিনি বলেন, ‘উদ্বেগ এবং চাপ সংক্রান্ত বিষয় থেকে ঘুরে দাঁড়াতে কাউন্সেলিং সাহায্য করতে পারে এবং ইমোশনাল ব্যালেন্স বজায় রাখতে সাহায্য করে।’