কলকাতা, বাগনানের পর এবার দুর্গাপুর। করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন রাজ্যের আরও তিন স্বাস্থ্যকর্মী। বৃহস্পতিবারই টিকা নেন তাঁরা। তারপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনজন। বর্তমানে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন তাঁরা। দুর্গাপুর নগর নিগম এলাকায় সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে চলছিল কোভিড টিকাকরণ। গত ১৬ জানুয়ারি শুরু হয় এই টিকাকরণের কর্মসূচি। দুপুরে পরপর দুই স্বাস্থ্যকর্মী দীপা গড়াই ও পূর্ণিমা হাজরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর খবর আসে আরও একজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। টিকা নেওয়ার কিছুক্ষণ পর শ্বাসকষ্ট শুরু হয় এবং শরীরে অ্যালার্জি বের হয়।
দীপা গড়াই দুর্গাপুরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের পুরুরিয়াডাঙা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মী। জানা গিয়েছে, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর থেকে মাথা ঘুরতে শুরু করে তাঁর। তড়িঘড়ি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয় ওই স্বাস্থ্যকর্মীকে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দীপা হাই ব্লাডসুগারের রোগী। ইনসুলিনও নিতেন। তিনজন অসুস্থ হওয়ার খবর আসতেই আপাতত টিকাকরণ বন্ধ করে দেওয়া হল দুর্গাপুরে। দুর্গাপুর নগর নিগমের মেয়র পারিষদ স্বাস্থ্য রাখি তিওয়ারি টিকাকরণ কর্মসূচি সাময়িক বন্ধ রাখার কথা বলেছেন।
দীপার মতোই অসুস্থ হয়ে পড়েন স্বাস্থ্যকর্মী পূর্ণিমা হাজরাও। তিনি দুর্গাপুরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের উইলিয়াম কেরি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মী। টিকা নেওয়ার পর থেকে তাঁরও মাথা ঘুরতে থাকে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি তিনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, পূর্ণিমার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে। টিকা দেওয়ার পর থেকে রক্তচাপ আরও বেড়ে যায়। তার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েন পূর্ণিমা। দুর্গাপুরে মল্লিকা দাস নামে আরও এক স্বাস্থ্যকর্মীও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি দুর্গাপুরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিধানপল্লি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মী। তাঁরও রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার ফলে বিপত্তি বলেই দাবি চিকিৎসকদের।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, আগে ১০ জনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সাতজন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিন্তু তার এসেছে ৪ জনের মৃত্যু সংবাদ। তবে কেউই প্রতিষেধকের কারণে মারা যাননি বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। করোনার টিকা নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতালের নার্স পিঙ্কি শূর। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ওই নার্সের একাধিক ওষুধে অ্যালার্জি ছিল। নার্স কিংবা তাঁর স্বামী টিকা নেওয়ার আগে সেই তথ্য জানাননি। তাই এই বিপত্তি। এছাড়া বাগনানের আশাকর্মী সাহানারা খাতুনও টিকা নিয়ে বাড়ি ফিরে সামান্য অসুস্থ বোধ করেন।
এই পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে প্রতিষেধক ঘিরে অনীহা তৈরি হয়েছে একাংশের মধ্যে। যে প্রতিষেধকের জন্য বহুদিন ধরে অপেক্ষা করেছে মানুষ, সেই প্রতিষেধকই নিতে যাচ্ছেন না অনেকে। ভরসা পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছে ওই একাংশ।