উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের চৈনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভরতপুর। সেই গ্রামেই একেবারে মর্মান্তিক ঘটনা। মৃত্যু একই পরিবারের পাঁচজনের। স্থানীয় সূত্রে খবর, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে ওই পরিবারের ১০ বছরের কন্যা জানিয়েছে, পরিবারের সকলের গায়ে বাবা কিছু ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। বাসিন্দাদের দাবি, ভোরে ওই বাড়ি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে সকলে ছুটে যায়। তারপরই দেখা যায় এই কাণ্ড।
প্রাথমিকভাবে বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, কাজকর্ম বিশেষ না থাকায় ঘরে ঘরেই অভাব। এর উপর করোনার জেরে বিভিন্ন জায়গায় বাজার দোকান বন্ধ থাকছে। উপার্জনের রাস্তা আরও কমে যাচ্ছে। সম্ভবত সেকারণেই সংসারের অভাব ও আর্থিক অনটন সহ্য করতে না পেরে স্ত্রী ও তিন কন্যা সহ তিনজনকে আগুনে পুড়িয়ে নিজেও আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন স্বামী। বাসিন্দাদের একাংশের ধারণা, পরিবারের সকলে খাওয়া দাওয়ার পর ঘুমিয়ে গেলে বন্ধ ঘরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন স্বামী রাম ভৌমিক। আগুনে মৃত্যু হয় স্বামী রাম ভৌমিক ( ৪০), স্ত্রী শঙ্করী ভৌমিক (৩২), কন্যা ঝর্ণা ভৌমিক (৭), সরস্বতী ভৌমিক ( ৪)। অপর কন্যা ১২ বছর বয়সী রানি ভৌমিকের দগ্ধ অবস্থায় পরে মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে হেমতাবাদ থানার ভরতপুর এলাকার কিসমত মালভুসা গ্রামে ৩ কন্যা সন্তান ও স্ত্রী শঙ্করীকে নিয়ে থাকতেন রাম ভৌমিক। একটি ভুটভুটি চালিয়ে সংসার চালাতেন। ইদানিং ভুটভুটি ভ্যান চালিয়ে রোজগারের পথও বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রী না মেলায় প্রায় দিনই খালি হাতে ঘরে ফিরতে হচ্ছিল তাঁকে। ইদানিং ঝাড়ুর ব্যবসাতেও বিশেষ লাভ হচ্ছিল না। সম্ভবত এরপরই পরিবার নিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে বাসিন্দাদের একাংশের ধারণা। মৃত রামচন্দ্রের দাদা সুরেন ভৌমিক বলেন, সম্ভবত অভাবের জন্য দাদা পরিবার নিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। গোটা বিষয়টি বোঝা যাচ্ছে না। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, সরকারি এত সুবিধা পেত। তারপর এই ধরনের অনটন থাকার কথা নয়। গোটা বিষয়টি দেখা হচ্ছে।