সম্প্রতি হাতির হামলায় একের পর এক বহু মানুষের মৃত্যু ঘটনা ঘটেছে বাংলায়। এই অবস্থায় হাতির হামলা রুখতে তৎপর হয়েছে বন বিভাগ। সেক্ষেত্রে হাতির গতিবিধি জানা গেলে প্রাণহানি অনেক ক্ষেত্রে রোখা সম্ভব হয়। তাই এর জন্য কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন ক্যামেরা বসাচ্ছে বন বিভাগ। পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসাবে ঝাড়গ্রামের হাতি করিডোরের বিভিন্ন পয়েন্টে হাতিদের রিয়েল টাইম গতিবিধি ট্র্যাক করার জন্য ৩০টি ক্যামেরা বসাচ্ছে বনবিভাগ।
আরও পড়ুন: শুঁড়ে করে তুলে ৫০ মিটার দূরে গিয়ে আছড়ে ফেলল হাতি, মৃত্যু হল সবজি বিক্রেতার
বর্তমানে এটি পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ক্যামেরাগুলি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যদি এই প্রকল্প সফল হয় তাহলে অতি সহজে হাতির গতিবিধি ট্রাক করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বন আধিকারিক দেবল রায়। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো অপারেশন এজেন্সির সহযোগিতায় এই উদ্যোগ নিয়েছে বন দফতর। জানা গিয়েছে, যদি পাইলট প্রকল্পটি ভালো ফলাফল দেয় এবং সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন পায় তাহলে জঙ্গলমহলে হাতি ট্র্যাক করার জন্য বর্তমানে থাকা ম্যানুয়াল ক্যামেরাগুলিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সক্ষম ক্যামেরা দিয়ে প্রতিস্থাপিত হবে।
বর্তমানে হাতির গতিবিধি ট্র্যাক করার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে বন কর্মী। মূলত তারা হাতির গতিবিধি সম্পর্কে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের রিপোর্ট করেন। তবে ঘন কুয়াশা এবং ভারী বৃষ্টির সময় বনকর্মীরা সমস্যার সম্মুখীন হন। তবে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন ক্যামেরা এর মধ্যেও ভালভাবে কাজ করতে সক্ষম। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ঝাড়গ্রামে হাতির হামলায় মৃত্যু হয়েছে সত্তর বছর বয়সি এক বৃদ্ধার। কোকিলা মাহাতো নামে ওই বৃদ্ধাকে ঘুমন্ত অবস্থায় শুঁড়ে করে তুলে নিয়ে গিয়ে উঠোনে আঁচড়ে ফেলে হত্যা করেছিল হাতি।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই হাতিটি আচমকা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসেছিল। সেক্ষেত্রে হাতির গতিবিধি জানা থাকলে দুর্ঘটনা রোখা যেত। এআই সক্ষম ক্যামেরাগুলি অন্ধকারেও হাতির উচ্চ মানের ছবি তোলা, অবস্থান এবং সঠিক সময় জানাতে সক্ষম। একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সেই তা জানতে পারবেন বনবিভাগের আধিকারিকরা। ঝাড়গ্রামের এক বন আধিকারিক বলেছেন, ‘আমাদের কাজ হবে ফোনে হাতি ট্র্যাক করা এবং গ্রামবাসীদের হাতির গতিবিধি সম্পর্কে সতর্ক করা। যদি হাতি লোকালয়ে চলে আসে তবে আমরা বন কর্মীদের পাঠাবো।’