বাইরে থেকে মদ খেয়ে এসে রোজদিনই স্ত্রীকে মারধর করতেন স্বামী। দিনের পর দিন এই অত্যাচার সহ্য করতেন স্ত্রী। এবার সহ্যের সীমা পেরিয়ে গেল স্ত্রীর। আর তার জেরে চরম পদক্ষেপ করলেন স্ত্রী। একেবারে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দিলেন স্বামীকে। এভাবেই রোজকার অশান্তি থেকে শান্তি পেতে চাইলেন স্ত্রী। তাই মেরে স্বামীকে খুনই করলেন স্ত্রী। এমন খুনের ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া সদর থানার শ্যামদাসপুর এলাকায়। অভিযুক্ত স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঠিক কী ঘটেছে বাঁকুড়ায়? স্থানীয় সূত্রে খবর, মদ্যপ স্বামীর রোজকার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ৬ বছর আগে স্বামীর ঘর ছেড়েছিলেন রীতা আদক। তবে তারপরও থামেনি স্বামীর অত্যাচার। সে মদ খেয়ে সোজা শ্বশুরবাড়ি গিয়েও হাজির হতেন। আর সেখানেও স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং মারধর করা হয়। শুক্রবারও একই ঘটনা ঘটেছিল। তখন স্ত্রী সোজা স্বামীকে গাছে বেঁধে মারধর করতে থাকেন। আর সেই মারের চোটেই মারা যায় স্বামী। তারপরই বাঁকুড়া সদর থানার শ্যামদাসপুরে গিয়ে পুলিশ অভিযুক্ত স্ত্রীকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে? পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত স্বামীর নাম সিন্টু আদক (৫০)। অভিযুক্ত স্ত্রীয়ের নাম রীতা আদক। তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পেশায় মোটর গ্যারাজ মেকানিক ছিলেন সেন্টু আদক। তাঁর সঙ্গে ২৫ বছর আগে বিয়ে হয় রীতার। তাঁদের তিন মেয়ে। মদ খেয়ে টাকা উড়িয়ে দিতেন স্বামী। আর স্ত্রীকে মারধর করতেন। সুতরাং সংসারে অভাব দেখা দিয়েছিল। এই মদ্যপ স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সংসার ভেঙে বেরিয়ে যান রীতা আদক। সেখানে গিয়েও একই অত্যাচারের মুখোমুখি হতে হতো। তাই রাগের মাথায় স্বামীকেই খুন করে ফেলেন স্ত্রী।
আর কী জানা যাচ্ছে? সংসার ভেঙে বেরিয়ে আসার পর বিড়ি বাঁধার কাজ নেন রীতা। আর তা করে টাকা জমিয়ে তিন মেয়ের বিয়ে দেন। এখন তিনি একটু নিশ্চিন্ত জীবন কাটাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও রোজ রাতে এসে স্বামী সিন্টু মদ খেয়ে গালিগালাজ করতেন বলে স্ত্রীর অভিযোগ। একইসঙ্গে প্রচণ্ড মারধর পর্যন্ত করা হতো। এদিন মদ্যপ অবস্থায় সিন্টু চলে যায় রীতার বাপের বাড়ি। তারপর ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। বিষয়টি কানে আসতেই সেখানে আসেন রীতা। তখন স্ত্রীকে দেখেই রড তুলে খুনের চেষ্টা করেন সিন্টু। তখন পাল্টা রীতা স্বামীকে বেঁধে রেখে মারধর শুরু করেন। আর তার জেরেই মৃত্যু হয়েছে সিন্টুর।