খুব সুক্ষ্ম হাতের কাজ। এই গলায় সোনার চেন ছিল। এই নেই। এমনই ঘটনা ঘটেছে ৬ জন মহিলার সঙ্গে। গলা থেকে সোনার চেন ছিনতাই। তবে নিঃশব্দে। এখানে শিশু থেকে বধূ কেউ বাদ যাননি। প্রথমে শিশুর গলার চেন গায়েব হল। তারপর মা নিজের গলায় হাত দিতেই দেখলেন সোনার চেন উধাও। আর এক যুবতী গলায় শাল জড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁর গলা থেকেও সোনার চেন হাওয়া। এমন ঘটনা ঘটেই চলছিল। আরও তিনজনের সোনার চেন খোয়া যেতেই আলোড়ন পড়ে যায়। কোলাঘাট থানার গোপালগঞ্জ হাইস্কুল মাঠে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন এলাকার মহিলারা। সেখানেই এমন ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় মোট চারজন মহিলাকে গ্রেফতার করেছে কোলাঘাট থানার পুলিশ। ধৃতরা সকলেই হাওড়ার বাসিন্দা।
এদিকে এটা একটা মহিলা ছিনতাইবাজের গ্যাং বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই গ্যাংয়ে পুরুষ অত্যন্ত কম। তারা গা–ঢাকা দিয়েছে। পুলিশ খুঁজছে। এই গ্যাং মূলত মহিলারাই চালায়। এই মাঠে অনুকূল ঠাকুরের একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেখানেই মানুষের ভিড় হয়। আর মহিলা ছিনতাইবাজের গ্যাং হাত সাফাইয়ের কাজ করে। বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ এখানে এসেছিলেন। অনেকের গলাতেই সোনার চেন ছিল। মহিলা ছিনতাইবাজের গ্যাং এমন অনুষ্ঠান দেখেই হাতের সুক্ষ্ম কাজ শুরু করে। ব্যস, সোনার চেন হাপিস হতে থাকে। এরা ভিড়ের অজুহাতে ধাক্কাধাক্কি করে। আর মুহূর্তের মধ্যে ৬ জনের গলা থেকে সোনার চেন উধাও হয়ে যায়।
অন্যদিকে পরে যখন সবাই লক্ষ্য করছেন দেখছেন সোনার চেন গলায় নেই। প্রথমে দু’বছরের এক মেয়ের গলায় চেন উধাও হয়। তারপর তাঁর মা লক্ষ্য করেন, তাঁর গলাতে চেন নেই। আবার এক যুবতী দেখেন, তাঁর গলাতেও সোনার চেন নেই। হাওড়ার প্রায় ১০ জনের গ্যাং সেদিন এই অনুষ্ঠানের মাঠকে টার্গেট করেছিল। চারজনকে ধরা গেলেও বাকিরা পগারপার। এরাই একের পর এক সোনার হার ছিনতাই করেছে শিশু ও মহিলাদের গলা থেকে। ঘাপটি মেরে থাকা ছিনতাইবাজরা এই কাজ করেছে। তবে যাঁদের গলা থেকে চেন খোয়া গিয়েছে, তাঁরা কেউই বোঝেননি।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন সুকান্ত মজুমদার, দিলেন পাশে থাকার বার্তা, কী লেখা আছে?
যখন একের পর এক মহিলারা বুঝতে পারলেন তখন পুলিশের দ্বারস্থ হন। শেফালি দেবী বলেন, ‘ওই অনুষ্ঠানে অনেকের সোনার চেন খোয়া গিয়েছে। মহিলা ছিনতাইবাজের গ্যাং এভাবে ভিড়ের মধ্যে সোনার চেন সাফাই করবে ভাবতেও পারিনি। আমাদের তিনজনের প্রায় তিন লক্ষ টাকা মূল্যের সোনার চেন ও লকেট খোয়া গিয়েছে। চারজন ধরা পড়েছে শুনেছি। তবে খোয়া যাওয়া সোনার চেন উদ্ধার হয়নি। তাই আমরা মানসিকভাবে চাপে আছি।’ কোলাঘাট থানার ওসি অনুষ্কা মাইতি বলেন, ‘এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা সকলেই মহিলা। তদন্ত চলছে।’