পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী–সহ বিভিন্ন তৃণমূল নেতা, বিধায়কদের দল বদলের জল্পনা কয়েকদিন ধরেই তুঙ্গে রয়েছে। বুধবার বাঁকুড়ার শুনুকপাহাড়ি ময়দানের জনসভা থেকে সেই জল্পনায় একপ্রকার জল ঢেলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গেরুয়া শিবিরের কারও নাম না করে তিনি বলেন, ‘দলে টানতে ফোন করে তৃণমূলকর্মী, বিধায়কদের লক্ষ, কোটি টাকার অফার দিচ্ছে। ওদের কেউ কেউ ভাবছে, এখন থেকে যোগাযোগটা করে রাখি। বাই চান্স যদি চলে আসে। বাই চান্স হবে না। চান্স থাকলে তো বাই চান্স।’
দলনেত্রী এদিন নিজের দলের উদ্দেশে বার্তা দেন, ‘সারা পশ্চিমবঙ্গে আমি একজন কর্মী হিসেবে আমিই এখন অবসার্ভার। তার কারণ, প্রত্যেক ব্লকে ব্লকে, কে কী করছে বা না করছে, আর কার সঙ্গে কে যোগাযোগ রাখছে, কে কে যোগাযোগ করছে— তার সবটার হিসেব আমি রাখি। দল আমাকে সাহায্য করছে।’
এদিন জনসভা থেকে নাম না করে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে একের পর এক আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। করোনা প্রতিরোধে দিলীপ ঘোষের গোমূত্র খাওয়ার নিদানের কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বলেছিল, গোমূত্র খেলে করোনা হবে না। কিন্তু তিনি তো খেয়েছিলেন। তাঁর হল কী করে?’
মুখ্যমন্ত্রীর ফের কটাক্ষ, ‘বলছে, গরুর দুধ থেকে সোনা পাওয়া যায়। তো আপনি একটু সোনা বের করে দেখান। দরকার পড়লে, আমি গরু দেব গ্রামের লোকেদের। যদি সোনা পায়!’ মোদী সরকারের ‘গোবর্ধন প্রকল্প’ নিয়ে এদিন কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। কারও নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেন, ‘ঘুটে দিতে পারেন? আগে ঘুটে দিতে শিখুন। মেয়েরা যখন রান্না করে তখন এই ঘুটে তাঁদের কাজে আসে।’
রাজ্য সরকার আর রাজ্যপালের টুইট–যুদ্ধের কথা প্রায় সকলেরই জানা। এদিন মমতা একপ্রকার আক্রমণ করেই বলেন, ‘কতগুলো অর্ধনর আর গর্ধনর বসে বসে রোজ টুইট করে। আর রোজ উল্টোপাল্টা কথা বলে বেরায়। প্রতিদিন তৃণমূলকে গালাগাল দেয়। তৃণমূল যেন ওদের চক্ষুশূল। আমি বলি, তৃণমূল যদি হয় তোমাদের চক্ষুশূল, আগামীদিন বাংলায় দেখবে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস নির্মূল। তৃণমূলই থাকবে। আর কেউ থাকবে না। অত সহজ খেলা নয়।’ এটি রাজ্যপালের প্রতি ইঙ্গিত কিনা তা অবশ্য পরিষ্কার করে বলেননি মুখ্যমন্ত্রী।