আসানসোল শহরকে রাজ্য সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে পুর প্রশাসকের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। শুক্রবার দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা তাঁর। কিন্তু তার আগেই বৃহস্পতিবার পুরনিগমে সমস্ত কাউন্সিলর ও কর্মীদের নিয়ে সভা ডেকে নিজের পদত্যাগের কথা ঘোষণা করলেন তিনি।
কেন এই পদত্যাগ? জিতেন্দ্র তিওয়ারি এর উত্তরে এদিন বলেন, ‘আসানসোলকে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। আসানসোলকে রাজ্য সরকার যেভাবে বঞ্চনা করছে তার প্রতিবাদেই এই পদত্যাগ। আমি চিঠি দেওয়ার পরও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। ফান্ড পাঠানো হয়নি।’ তাঁর অভিযোগ, ‘এই শহর আগে যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থাতেই থাকবে? হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব যাবে এখান থেকে কিন্তু এই শহরকে ওঁরা কিছু দেবেন না।’ পদত্যাগের কারণ হিসেবে জিতেন্দ্রর বক্তব্য, ‘মানুষের জন্য যদি কাজই করতে না পারলাম তা হলে এই চেয়ারে বসে লাভ কী? মানুষের আশা, আকাঙ্খা যদি পূরণই না করতে পারলাম তা হলে এই পদের কী কাজ?
যদিও শুক্রবারই সমস্যা সমাধানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা ছিল জিতেন্দ্র তিওয়ারির। কিন্তু তার আগেই কেন এমন সিদ্ধান্ত। জিতেন্দ্র তিওয়ারির জবাব, ‘মুখ্যমন্ত্রীকে আর বিড়ম্বনায় ফেলে লাভ নেই। মুখ্যমন্ত্রী এ সব বিষয় দেখভালের জন্য আলাদা দফতর রেখেছেন।’ তখনই ফিরহাদ হাকিমের নাম করে জিতেন্দ্র আক্রমণ করে বলেন, ‘আসানসোলের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর জন্য যা ভালবাসা আছে তা বোঝার পরও একজন মন্ত্রী যদি নিজের গোলামির জন্য এই শহরকে বঞ্চিত রাখে, তার পর আর কী করার থাকে!’
শনিবারই অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপি–তে যোগ দেওয়ার কথা শুভেন্দু অধিকারীর। বুধবার শুভেন্দুর সঙ্গে কাঁকসায় সাংসদ সুনীল মণ্ডলের বাড়িতে জিতেন্দ্র তিওয়ারির কথাও হয়েছে। তবে কি তিনিও গেরুয়া শিবিরে পা রাখছেন? না, এই জল্পনাকে এদিন নস্যাৎ করে দিয়েছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তাঁর সাফ জবাব, ‘আমি বিজেপি–তে যেতে চাই না। বিজেপি–কে সমর্থনও করি না।’ তবে শুভেন্দু অধিকারীর বিধায়ক পদ, দল ছাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি চাই শুভেন্দু অধিকারীকে দলে রাখার জন্য যা যা করণীয় তা তৃণমূল করুক। দিদির পর দ্বিতীয় হিসেবে শুভেন্দু অধিকারীর নাম ঘোষণা করা হোক।’
এবার কি পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দেবেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি? যদিও এ নিয়ে সরাসরি কিছু জানাননি তিনি। তাঁর কথায়, ‘আসানসোল পুরনিগমের অফিসে কোনও রাজনৈতিক বক্তব্য করব না। সঠিক জায়গায় সঠিক উত্তর দেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘পাণ্ডবেশ্বরের মানুষ ভোট দিয়েছেন। বিধায়ক হয়েছি। নীতিগতভাবে বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়া উচিত। দল ছাড়ার পরও অনেকে বিধায়ক থাকে। মানে অন্য দল থেকে এসেও বিধায়ক থাকতে পারে। এই প্রথা এখন পশ্চিমবঙ্গে চলছে।’ এই কথা বলে এদিন জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি।