একসময়ের দাপুটে বাম নেতা। বাম আমলে তাঁকে নিয়ে নানা কথা রটত হলদি নদীর ধারে।২০১১ সালে পূর্ব মেদিনীপুরে সেই লক্ষ্ণণ সাম্রাজ্যের কার্যত পতন ঘটে। তৎকালীন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরেই কার্যত পতন হয় তাঁর সাম্রাজ্যের। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ক্রমে সামনে আসতে থাকে। এরপর সিপিএম থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর বছর কয়েকের বিরতি। আচমকাই লক্ষ্ণণ শেঠ যোগ দিয়েছিলেন পদ্মশিবিরে। তখন তৃণমূলকে পরাস্ত করতে একেবারে গেরুয়া পতাকা হাতে তাঁকে নামতে দেখা যায় রাজনীতির চেনা ময়দানে। কিন্তু সেই সম্পর্কও টেকেনি বেশিদিন। বছর খানেকের মধ্যেই লক্ষ্ণণ শেঠ ভিড়ে গিয়েছিলেন কংগ্রেস শিবিরে। ২০১৯ লোকসভা ভোটে তমলুক লোকসভা আসন থেকে টিকিটও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাতেও বিশেষ সুবিধা হল না। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এবারের বিধানসভা ভোটেও তাঁকে বিশেষ সক্রিয়ভাবে দেখা যায়নি। তবে ঘাসফুল শিবিরের সঙ্গে কিছুটা ঘনিষ্ঠতার আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। আর তৃণমূল জিততেই তিনি মমতার প্রশংসায় একেবারে পঞ্চমুখ। এমনকী তৃণমূলে যোগ দেওয়ারও ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি।
সংবাদ মাধ্যমের কাছে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমার ইচ্ছা তৃণমূলেই যোগ দেওয়ার। তৃণমূলের বিকল্পও কেউ নেই। বামফ্রন্ট, সিপিআইএম, কংগ্রেসের মতো দলগুলি এখানে প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। সংসদীয় গণতন্ত্রে কী ভাবে রাজনীতি করতে হয় তা এই দলগুলি ঠিকমতো উপলব্ধি করতে পারেনি।’ আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস বিশেষত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদীয় গণতন্ত্রের উপযোগী হয়ে উঠছেন ও সেইভাবে কাজ করছেন।’ কিন্তু রাজনৈতিক মহলের একটাই প্রশ্ন, যেভাবে সুযোগ বুঝে বার বার জার্সি বদলেছেন লক্ষ্ণণ শেঠ সেখানে কি আদৌ তাঁর কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা আছে? তলানিতে চলে যাওয়া বিশ্বাসযোগ্যতাকে সঙ্গী করে তিনি কি আদৌ শুভেন্দর বিরুদ্ধে লড়তে পারবে? কাঁটা দিয়েই কি কাঁটা তুলবে তৃণমূল?