অ্যাথলিট স্বপ্না বর্মনের বাড়িতে অভিযান চালানোর মুখ্যমন্ত্রীর রোষে পড়ে বদলি হয়েছেন জলপাইগুড়ির বেলাকোবার রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত। নবান্নে বসেই সেকথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। ওদিকে দক্ষ আধিকারিকের বদলিতে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বেলাকোবায়। স্থানীয়দের দাবি, যে করেই হোক রুখতে হবে সঞ্জয় দত্তর বদলি। এমনকী স্থানীয় তৃণমূল নেতারাও মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে অখুশি। তাদের প্রশ্ন, সোনা জিতেছে বলে স্বপ্না আইনের ঊর্ধ্বে না কি?
বলে রাখি, ডুয়ার্সে বাড়িতে কাঠ বা গুঁড়ি মজুত করতে গেলে বনদফতরের বৈধ নথি প্রয়োজন হয়। কাঠের নথি না থাকলে তা চোরাই বলে চিহ্নিত করে বনদফতর। দিন কয়েক আগে স্বপ্নার বাড়িতে কাঠ মজুত রয়েছে বলে তল্লাশিতে যান রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত। ডুয়ার্সে রীতিমতো দাবাং রেঞ্জার বলে পরিচিত সঞ্জয়বাবু। তাঁর ভয়ে কাঠ ও বন্যপ্রাণী পাচারকারীরা ত্রিসীমানায় ঘেঁষতে পারে না। এহেন সঞ্জয়বাবু স্বপ্নার কাছে ওই কাঠের বৈধ নথি দেখতে চান। সেই নথি দেখাতে পারেননি স্বপ্না। এর পর তাঁকে নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে রেঞ্জ অফিসে নথি পেশ করার নির্দেশ দিয়ে আসেন তিনি। পরে স্বপ্না জানান, বাড়ি তৈরির জন্য ওই কাঠ কিনেছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হলে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। কলমের এক খোঁচায় সঞ্জয়বাবুকে বদলির নির্দেশ দেন তিনি। কিন্তু স্থানীয়দের প্রশ্ন, সৎ ও দক্ষ আধিকারিক সঞ্জয় দত্তের দোষটা কী? একই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল সমর্থিত বনকর্মীদের সংগঠনও। তাদের দাবি, নিয়ম মেনেই কাঠের জন্য স্বপ্নার কাছে বৈধ নথি দেখতে চেয়েছেন সঞ্জয়বাবু। কোন আইন ভাঙায় তাঁকে বদলি হতে হল তা বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চেয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা। একই সঙ্গে সঞ্জয়বাবুর বদলি রদ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
স্থানীয়দের দাবি, এলাকাবাসীর সঙ্গে জোট বেঁধে জলপাইগুড়ি জেলায় চোরাকারবার অনেক কমিয়ে এনেছিলেন সঞ্জয়বাবু। এহেন সৎ অফিসারকে পাহাড়ে বদলি করে দেওয়ায় হতাশ তাঁরা। ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন অনেকে।