ঝাড়ফুঁকের আছিলায় অসুস্থ তরুণীকে ব্লেডের ভয় দেখিয়ে রাতভর ধর্ষণের অভিযোগ উঠল ওঝার বিরুদ্ধে। শনিবার মধ্যরাতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের ঝিরেলা গ্রামের ধুমক্ষেত্র তলায়। রবিবার নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ওঝাকে গ্রেফতার করেছে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। সোমবার অভিযুক্তকে কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম মারু শেখ ওরফে শফিকুল শেখ। এলাকায় খ্যাপাবাবা নামে পরিচিত ওই অভিযুক্ত। চিকিৎসার নামে ওই গ্রামের ১৯ বছরের তরুণীকে রাতভর একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় ওঝা হিসেবে পরিচিত মারু শেখ। গ্রামবাসীরা তার কাছে ঝাড়ফুঁক করতে যান। নির্যাতিতার বাবা জানিয়েছেন, কয়েক মাস ধরেই তাঁর মেয়ে শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভুগছে। সেই কারণে তিনি তাঁর মেয়েকে নিয়ে অভিযুক্ত ওঝার শরণাপন্ন হন। তাঁর অভিযোগ, অমাবস্যার রাতে তাঁর মেয়েকে ঝিরেলা গ্রামের শ্মশানে নিয়ে যেতে বলেছিলেন ওই ওঝা। নির্যাতিতার বাবার আরও অভিযোগ, ওই ওঝা তাঁকে জানায়, ওই শ্মশানের কাছাকাছি পীরতলা তার গুরু থাকেন। তিনি বলেন, ‘সেই অনুযায়ী শনিবার অমাবস্যার রাতে মেয়েকে নিয়ে ঝিরেলা গ্রামে যাই। আমাদের সঙ্গে মারু শেখও সেখানে যায়। নির্যাতিতা তরুণীর দাবি, ধুমক্ষেত্র তলায় তাঁর বাবাকে বসিয়ে রাখা হয়। তারপর তাঁকে অজয় নদীর ধারে নিয়ে যায় মারু শেখ।
নির্যাতিতা তরুণী বলেন, ‘যাওয়ার আগে বাবাকে ও বলে যায়, মেয়ের চিৎকার শুনলে যেন তিনি নদীর ধারে না- আসেন, তাহলে ওর ক্ষতি হবে।’ তরুণীর কথায়, ‘ধারালো ব্লেড দেখিয়ে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে চরম ক্ষতি করে আমার।’ নির্যাতিতা আরও জানান, সারারাত ধরে ব্লেডের ভয় দেখিয়ে তাকে ৫ বার ধর্ষণ করে ওই ওঝা। পরদিন বাড়ি ফেরার পরে মাকে সমস্ত ঘটনা খুলে জানান নির্যাতিতা। রবিবারই মঙ্গলকোট থানায় গিয়ে ওই ওঝার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার পরিবার।