দাগী আসামি। একাধিক ডাকাতির ঘটনায় নাম জড়িয়েছে। তাই পুলিশের চোখে ধুলো দিতে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে উত্তরপাড়ায় আসে। সেখানেও সাঙ্গপাঙ্গদের জুটিয়ে একটি ব্যাঙ্ক থেকে লুঠ করে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। বিভিন্ন ছক কষেও শেষপর্যন্ত পুলিশের হাতে ধরা পড়ল সেই ডাকাত এবং তার তিন সহযোগী।
চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, 'মূল পান্ডা প্রীতম ঘোষ বাংলা এবং ওড়িশার একাধিক ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্ত। সে ওড়িশার একটি জেল থেকে পালিয়ে বিহারে লুকিয়ে ছিল বলে ধারণা। আমরা তা যাচাই করছি।'
প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, বিহারের রাজাপাকার এলাকার বাসারা গ্রাম থেকে সাইকেল চালিয়ে উত্তরপাড়ায় এসেছিল প্রীতম। উত্তরপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে থাকছিল সে। উত্তরপাড়া থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, 'সহজে বাংলায় ঢোকার জন্য সে সাইকেল বেছে নিয়েছিল। শ্রমিকের ছদ্মবেশে বাসে করে সীমান্তে পরীক্ষা করা হত। একাধিক ঘটনায় অভিযুক্ত থাকায় সে ভেবেছিল, এভাবে পুলিশের জালে ধরা পড়ে যাবে। পরিযায়ী শ্রমিকরা কয়েকশো কিলোমিটার হেঁটে আসছেন দেখে প্রীতম সাইকেলে করে আসার পরিকল্পনা করে।'
গত বুধবার উত্তরপাড়ায় পৌঁছানোর পর পুরনো সাঙ্গপাঙ্গদের ফোন করে সে। পরের দু'দিন ভালোভাবে এলাকা জরিপ করে তারা। পরদিন দুপুর তিনটে নাগাদ একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক হানা দেয়। প্রীতম গাড়ি নিয়ে ব্যাঙ্কের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকে। বাকিরা ব্যাঙ্কের ভিতর গিয়ে টাকা লুঠ করে। পরে অবশ্য চারজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রীতম ছাড়া বাকিরা হল - সঞ্জয় পাসোয়ান, সঞ্জীব পাসোয়ান এবং তাপস দাস। প্রত্যেকেরই বয়স ২৫-৩০-এর মধ্যে।
উত্তরপাড়া থানার আইসি এস পট্টনায়েক বলেন, 'ওরা বন্দুক নিয়ে গিয়েছিল এবং প্রায় ১৭ লাখ টাকা লুঠ করেছিল। আপাতত ১০ লাখ টাকার মতো উদ্ধার করেছি আমরা। একটি বন্দুক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বিহার থেকে যে সাইকেলে করে উত্তরপাড়ায় এসেছিল, সেটিও উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।'
পুলিশ জানিয়েছে, প্রীতমের স্ত্রী এবং শাশুড়িকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কারণ শ্বশুরবাড়িতেই সে লুকিয়েছিল এবং লুঠ করা টাকার একটি অংশ সেখানে লুকিয়ে রেখেছিল। উত্তরপাড়া থানার আইসি বলেন, ‘মাঝেমধ্যে বিশ্রাম নিয়ে হুগলি আসতে তার তিনদিন সময় লেগেছিল। টাকা প্রায় ফুরিয়ে যাওয়ায় ব্যাঙ্ক লুটের পরিকল্পনা করেছিল সে। কিন্তু যেহেতু লকডাউন ছিল, তাই চুরি করা সাইকেলে পুরো রাস্তা এসেছিল। আরও তথ্যের জন্য আমরা এখনও জেরা করছি।’