যা আশা করা যায়নি এবার তেমনটাই ঘটে গেল। যখন কেন্দ্রীয় সরকার মিড–ডে মিল নিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে তদন্ত করাচ্ছে সেই আবহে পড়ুয়াদের পাতে উঠে এল মাছের রাজা ইলিশ। ভাত, ডাল, তরকারি, সয়াবিন এবং কখনও ডিম—এটাই ছিল মেনুতে। মাঝেমধ্যে চিকেনও জুটত। বলা যেতে পারে সরকারি স্কুলগুলিতে মিড–ডে মিলের এটাই তৈরি মেনু। সেখানে আচমকা এলাহি ব্যবস্থা হলে মন তো ফুরফুরে হবেই। এমনই ঘটনা ঘটল ফলতা অবৈতনিক প্রাইমারি স্কুলে। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার পড়ুয়াদের পাতে ইলিশ মাছ তুলে দিল। তাতে আনন্দে আটখানা হয়ে যায় পড়ুয়ারা। তারা আশা করেনি পাতে ইলিশ মাছ মিলবে। সেখানে হঠাৎ জুটে গেল ইলিশ মাছ। তখন কার্যত ইলিশ উৎসব পালনের মতো আনন্দ চোখে পড়ল সকলের। এত খুশি হয়েছে পড়ুয়ারা যে জিজ্ঞাসা করেছে তারা—এবার থেকে কি ইলিশ মাছ মিলবে? তাতে সবাই খুশি হলেও সেটা বাস্তবে সম্ভব নয়। কারণ সারা বছর ইলিশ মাছ পাওয়া যায় না। মিড–ডে মিল এত আনন্দে খেল বাচ্চারা যে তা ছবি তুলে রাখল স্কুল কর্তৃপক্ষ। ছোট ছোট পড়ুয়ারা বেজায় খুশি হয়ে বাড়িতেও ইলিশের গল্প করল। তাদের আনন্দ দেখে খুশি অভিভাবকরাও।
অন্যদিকে রাজ্য সরকার নির্ধারিত মেনুর বাইরে গিয়ে ফলতা অবৈতনিক প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রায়ই পড়ুয়াদের জন্য নানা জিভে জল আনা মেনুর বন্দোবস্ত করে থাকেন। কখনও ফ্রাইড রাইস ও চিলি চিকেন, কখনও বিরিয়ানি। এবার একেবারে মধ্যাহ্নভোজে গঙ্গার ইলিশ মিড–ডে মিলে আসবে এটা কেউ ভাবতে পারেনি। প্রাক প্রাথমিক এবং প্রাথমিকের পড়ুয়াদের জন্য আলাদা আয়োজন ছিল। একদম ছোট পড়ুয়াদের জন্য ছিল বাগদা চিংড়ি। এই বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর বলেন, ‘ইলিশ মাছে কাঁটা বেশি। বাচ্চাদের বেছে খেতে অসুবিধা হবে। গলায় কাঁটা ফুটতে পারে সেই কথা খেয়াল রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।’ তবে বড় ছাত্র–ছাত্রীদের জন্য ছিল ইলিশ মাছ ভাজা ও ভাপা ছিল।
আরও পড়ুন: ‘প্রথমে মুখে লাথি পরে ডোজ কমিয়ে পেটে ঘুষি’, রান্নার গ্যাসের দাম নিয়ে দেবাংশুর পোস্ট
আর কী জানা যাচ্ছে? ফলতার এই প্রাথমিক স্কুলের এমন ঘটনা এখন অন্যান্য জেলার স্কুলেও ছড়িয়ে পড়েছে। তাই অনেক প্রধানশিক্ষকই চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন যাতে ছোট পড়ুয়াদের একটু বাড়তি আনন্দ দেওয়া যায়। ইলিশ মাছ না হলেও অন্য অনেক মেনু আছে যা শিশু মনে আনন্দের জোয়ার তোলে। আর ফলতা প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘এখানে অনেক পড়ুয়া নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে আসে। তারা নানা ধরনের খাবারের কথা বলে। মনের ইচ্ছের কথা জানায়। আর সেসব জানতে পেরেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে। ওদের মুখে হাসি দেখার চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে।’