রেল, নদী ও সড়কপথে নির্বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে আদর্শতম জায়গা এই রাজ্য। অদূর ভবিষ্যতে শুধু লজিস্টিক সেক্টরেই প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে এখানে। সেদিকে তাকিয়েই লজিস্টিক সেক্টরের উন্নয়নে বিশেষ বাণিজ্যিক পলিসি তৈরি করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কয়েক মাসের মধ্যেই এই পলিসি পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে বলে জানালেন রাজ্যের শিল্প তথা অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
সম্প্রতি সিআইআই আয়োজিত এক অনলাইন সেমিনারে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘হরিণঘাটায় ১০০ একর জমির ওপর লজিস্টিক পার্ক তৈরি করছে ফ্লিপকার্ট। উলুবেড়িয়ায় লজিস্টিক পার্ক তৈরি করতে বিনিয়োগ করেছে এশিয়ার অন্যতম বড় সংস্থা ইএসআর। রাজ্য জুড়ে বিচ্ছিন্নভাবে এই প্রকল্পগুলিকে একত্রীকরণ করতে এবং তাদের প্রয়োজনীয় জমি, পরিকাঠামো ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানে আমরা বণিকসভাগুলির সঙ্গে আলোচনা করে নতুন পলিসির খসড়া তৈরি করেছি।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যে দুর্গাপুর, শিলিগুড়ি, মালদা, ডানকুনি এবং তাজপুরে লজিস্টিক হাব তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুরে সার ও রাসায়নিক শিল্পের ভিত্তিতে ও শিলিগুড়িতে চা শিল্পের ভিত্তিতে তৈরি হবে লজিস্টিক হাব। ডানকুনিতে শাক–সবজি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের ভিত্তিতে এবং পেট্রো কেমিক্যালসের ভিত্তিতে লজিস্টিক হাব হবে তাজপুরে। এ দিকে, খড়গপুর ও পানাগড়ে ৫০০ একর করে, হলদিয়ায় ৩০০ একর–সহ রাজ্যের ১৬টি শিল্পাঞ্চল বিনিয়োগকারীদের জমি দিতে প্রস্তুত।’
পশ্চিমবঙ্গের পূর্বে বাংলাদেশ, উত্তরে নেপাল ও ভূটান। ভারতের উত্তর–পূর্বের ৭টি রাজ্য ছাড়াও বিহার, ঝাড়খণ্ড ও সিকিম জলপথে ব্যবসা–বাণিজ্যের জন্য কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। হুগলি নদীর গতিপথে বেনারস পর্যন্ত কার্গো পরিষেবার জন্য তৈরি হচ্ছে টার্মিন্যাল। স্বাভাবিকভাবেই এমন ভৌগলিক অবস্থান লজিস্টিক ব্যবসার ক্ষেত্রে অনুকূল। পাশাপাশি শুধু কলকাতায় লজিস্টিক পরিষেবা ব্যবহার করেন এমন গ্রাহক রয়েছে প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ। উত্তর–পূর্ব ভারতে গ্রাহকসংখ্যা সাড়ে ৪ কোটিরও বেশি। তাই পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।