গ্রামে গা ঢাকা দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। বিষয়টি কানে যেতেই তৎপর হয় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী–সহ গ্রামবাসীরা। আর তখনই দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে আহত হন তিন তৃণমূলকর্মী। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁরা। ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলার। কুরিয়াভাঙা গ্রামে তিন তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় পুলিশের জালে কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিশাল। জীবনতলা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বিশালকে।
অসামাজিক কাজের উদ্দেশ্যে একদল দুষ্কৃতী গ্রামে ঢুকেছে বলে সোমবার রাতে খবর যায় মাজেদ গাজি, আলমগীর গাজি এবং মোসলেম মোল্লা নামে ওই তিন তৃণমূল কর্মীর কাছে। তাঁরা জানতে পারেন, এলাকারই এক রিকশাচালকের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এরপরই ওই ব্যক্তির বাড়িতে যান তৃণমূল কর্মীরা। সেখানে গিয়ে কারও দেখা পাননি তাঁরা। এরপরই ওই রিকশাচালকের ঘরে দুষ্কৃতীদের খোঁজে যান ওই তিন যুবক। অভিযোগ, তাঁদের দেখতে পেয়েই আচমকা গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। পায়ে ও বুকে গুলি লাগে তৃণমূল কর্মীদের। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তাঁরা।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, গ্রামের কুতুবুদ্দিন শেখের বাড়িতে গা–ঢাকা দিয়ে আছে কয়েকজন কুখ্যাত দুষ্কৃতী। এলাকাবাসীর সন্দেহ হওয়ায় ওই বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন তাঁরা। এলাকার মানুষজনের আসার খবর পেয়েই সেখান থেকে পালায় দুষ্কৃতী দল। এরপর পিছু ধাওয়া করে কয়েকজন গ্রামবাসী। আর তখনই গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে তিন দুষ্কৃতী। অভিযোগ, দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলিতে আহত হন তিনজন গ্রামবাসী তথা তৃণমূলকর্মী।
স্থানীয়রা তড়িঘড়ি তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যায় ক্যানিং হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর গুলিবিদ্ধদের পাঠানো হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসা চলছে তাঁদের। একজনের পেটে ও দু’জনের পায়ে গুলি লেগেছে। অন্যদিকে এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ধৃতদের মধ্যে একজন বিশাল দাস নামে কুখ্যাত দুষ্কৃতী। বিশালের বাড়ি হুগলির চুঁচুড়াতে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই বিশাল দাসের বিরুদ্ধে একাধিক খুনের অভিযোগ আছে। কয়েকদিন আগে এক ব্যক্তিকে খুন করার পর দেহ টুকরো টুকরো করে দিয়েছিল সে। এরপর সেখান থেকে সে গা ঢাকা দেয়। আশ্রয় নেয় জীবনতলা থানার কুতুবুদ্দিন শেখের বাড়িতে। কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিশাল দাসকে জেরা করতে চুঁচুড়া থেকে হুগলি জেলা পুলিশের একটি দল জীবনতলায় যাচ্ছে। এই ঘটনায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, আক্রান্ত তিনজন তৃণমূল কর্মী। আর দুষ্কৃতীরা হল বিজেপি-আশ্রিত। গ্রামে অশান্তি ছড়াতে তারা এখানে গা–ঢাকা দিয়েছিল। যদিও বিজেপি এই অভিযোগ ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছে। আর এটা তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব বলে পালটা অভিযোগ করেছে।