পানীয় জল সংগ্রহ নিয়ে বচসা এবং তা থেকে মারামারি চরমে উঠল। এই মারামারির জেরে খুন হয়ে গেলেন এক বাসিন্দা। রাস্তার কল থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করতে গিয়ে এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল। মেদিনীপুর শহরের এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস–বিজেপির মধ্যে তুমুল তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপির দাবি, ওই ব্যক্তি তাদের দলের সদস্য। তাঁকে খুন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর তৃণমূল কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, প্রতিবেশিদের মধ্যে গণ্ডগোলের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। তিন মহিলা–সহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত ব্যক্তির নাম দেবাশীষ শীল (৪৩)। মেদিনীপুর শহরের বড়বাজার এলাকায় তাঁর বাড়ি। ধৃতদের মধ্যে দু’জন নাবালিকা রয়েছে। তাই তাদের জুভেনাইল কোর্টে তোলা হয়েছে। দেবাশীষের স্ত্রী বাসন্তী শীল বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ির সামনে রাস্তার কল থেকে পানীয় জল ভরার সময় প্রতিবেশি স্বপন দে’র পরিবারের সদস্যরা আমার স্বামীকে গালিগালাজ করে। আমাকে মারধরও করা হয়। তখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন আমার স্বামী। তাঁকেও মারধর করা হয়।’ জখম অবস্থায় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
রাতে কোতোয়ালি থানায় স্বপন, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও ছেলের নামে লিখিত অভিযোগ জানান দেবাশীষের পরিবার। দেবাশীষের স্ত্রী বাসন্তীর অভিযোগ, ‘নির্বাচনের পর থেকেই আমার স্বামীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এমনকী মারধর করা হয়েছে। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে আসার কথাও বলা হচ্ছিল। যারা ওকে পিটিয়ে মেরেছে তারা তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জড়িত।’
বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি, দেবাশীষ মেদিনীপুর শহরের ১৯৯ বুথের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। জেলা সভাপতি সৌমেন তিওয়ারি বলেন, ‘বিজেপি করার জন্যই দেবাশীষকে পিটিয়ে মেরেছে তৃণমূল কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা। পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুক।’ এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, ‘মেদিনীপুরের মতো শান্তির শহরে এটা বাঞ্ছনীয় নয়। প্রতিবেশীদের মধ্যে পানীয় জল নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদ চলছিল। কিন্তু তাতে রং চড়িয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে বিজেপি।’