পশ্চিমবঙ্গ বন দফতরে কাজে যোগ দেওয়ার ২ মাসের মধ্যে কামাল করে দেখাল অরল্যান্ডো। বৃহস্পতিবার সকালে গরুমারা জাতীয় উদ্যানের ভেতর এক গৌর অর্থাৎ ভারতীয় বাইসনের দেহ দেখতে পান বনকর্মীরা। মৃতদেহের কিছু অংশ না পাওয়ায় তদন্ত শুরু করে বন দফতর। সূত্র মারফত তদন্তকারী আধিকারকরা জানতে পারেন, ওই বাইসনটিকে শিকার করে তার মাংস রান্না করেছে কয়েকজন গ্রামবাসী।
এর পরই তল্লাশি শুরু করে তদন্তকারীদের একটি দল। তিনটি বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পরও কিছু না পাওয়ায় সহায়তা নেওয়া হয় অরল্যান্ডোর। অরল্যান্ডো আর কেউ নয়, সে হল বেলজিয়ান ম্যালিনয় প্রজাতির এক স্নিফার ডগ। চোরাশিকারিদের শায়েস্তা করার জন্যই পশ্চিমবঙ্গ বন দফতর এই গোয়েন্দা কুকুরকে গরুমারা জাতীয় উদ্যানে মোতায়ন করে। তদন্তে নেমে এক কুঁড়েঘরের ছাদে লুকিয়ে রাখা বাইসনের মাংস খুঁজে পায় অরল্যান্ডো।
বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, ‘এই প্রথম অরল্যান্ডোকে তদন্তের কাজে নামানো হল। জলপাইগুড়ি জেলার বোড়োদিঘি চা বাগানের কাছে একটি গোপন আস্তানা থেকে ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও ৭ জনের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছে।’ তদন্তকারী দল ওই গোপন আস্তানা থেকে কাঁচা মাংস, ধারালো অস্ত্র ও মদ–সহ কিছু রান্না করা মাংস উদ্ধার করেছে। সেগুলির নমুনা ফরেনসিক তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
এই বেলজিয়ান ম্যালিনয় প্রজাতির কুকুরের সাহায্যেই ওসামা বিন লাদেন থেকে আইএসআইএস নেতা আবু বকর আল বাগদাদি সকলে ধরা পড়েছে। ভারতে সর্বপ্রথম এই প্রজাতির কুকুরে পরিচয় করায় সিআরপিএফ। সেই নকশালবিরোধী অভিযান–সহ নানা লক্ষ্যপূরণে ভারতীয় সুরক্ষা বাহিনীর অন্যতম প্রিয় হয়ে উঠেছে এই কুকুর।
পশ্চিমঙ্গের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিনহা বলেন, ‘জুন মাসের শেষে রাজ্য বন দফতরে যোগদান করে অরল্যান্ডো। মধ্যপ্রদেশের ভোপালে পুলিশ কুকুর প্রশিক্ষণ স্কুলে সে প্রশিক্ষণ পায়। অরল্যান্ডোকে গরুমারায় পাঠানো হয়। আর শায়ানা নামে আরেকজন বেলজিয়ান ম্যালিনয় প্রজাতির কুকুরকে পাঠানো হয়েছিল সুন্দরবনে।’