পূর্ব বর্ধমানে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলেকে গুলি করে খুনের ঘটনার পর সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতে এবার প্রধানের স্বামীর ওপর প্রাণঘাতী হামলা মালদায়। শনিবার গভীর রাতে
মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার কাপাইচণ্ডী গ্রামের বাসস্ট্যান্ডের কাছে কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলি প্রধানের স্বামীর উপর প্রাণঘাতী হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় প্রধানের স্বামী আহত হলেও অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। এলাকাবাসীদের তাড়া খেয়ে আক্রমণকারীরা মোটরসাইকেলে চড়ে চম্পট দেয়। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, টিউবওয়েল বসানোর জন্য প্রধানের স্বামী ১০ হাজার টাকা কাটমানি চাওয়াতেই এই হামলা। অন্যদিকে প্রধানের স্বামী আব্দুর রশিদের অভিযোগের তির কংগ্রেসের দিকে। পাল্টা কাটমানি ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা কটাক্ষ কংগ্রেসের। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগমারা গ্রামের পঞ্চায়েত মেম্বার আখতারি খাতুন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। কিছুদিন আগে ওই গ্রামের এক তৃণমূল কর্মী সঞ্জুর আলি নামে বাসিন্দার সঙ্গে প্রধানের স্বামীর বচসা হয়। সেখানেই তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় সঞ্জু। এই ঘটনার দিনকয়েক কাটতে না কাটতেই শনিবার গভীর রাতে প্রধানের স্বামীর উপর প্রাণঘাতী হামলা হয়। তাই ঘটনার সঙ্গে সঞ্জুর দলবলের যোগ থাকার সূত্র দেখতে পাচ্ছেন অনেকে। যদিও সঞ্জুর পরিবারের দাবি, তারা এ ঘটনার সঙ্গে কোন ভাবেই যুক্ত না। তাদের বাড়িতে বসানোর জন্য পঞ্চায়েত সমিতি থেকে একটি নলকূপ পান। কিন্তু ওই নলকূপ বসাতে গেলে প্রধান ও তার স্বামী ১০ হাজার টাকা কাটমানি দাবি করে। কিন্তু সঞ্জুর আলির পরিবার ওই টাকা দিতে নারাজ। এ নিয়ে খানিকটা গণ্ডগোল হয়েছিল।
এদিকে প্রধানের স্বামী আব্দুর রশিদ জানান, শনিবার রাতে তিনি থানা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। কাপাই চণ্ডী বাসস্ট্যান্ডের কাছে তার উপরে চারজন মোটরসাইকেল আরোহী মুখ ঢাকা অবস্থায় এসে বাঁশ দিয়ে তাঁর ওপর হামলা করে। তিনি কোনক্রমে প্রাণে বাঁচিয়ে একজনের বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের তাড়া খেয়ে ওই মোটরসাইকেল আরোহীরা পালিয়ে যায়।
তাঁর দাবি, আমার গ্রামে একটি বাড়িতে পঞ্চায়েত সমিতির দেওয়া টিউবওয়েল বসানোর প্রতিবাদ জানাই। সেখানেই সঞ্জুর আলি দলবল নিয়ে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। তার জেরেই রাতে আমাকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করেছে তারা। ওরা কংগ্রেসের সমর্থক।
এদিকে এ প্রসঙ্গে জাতীয় কংগ্রেসের নেতা আবদুস শোভান কটাক্ষের সুরে বলেন, নিজেদের দলের মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এর ফলেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এখানে আমাদের কোনো কর্মী জড়িত নয়। ওরা নিজেরাই কাটমানি দ্বন্দ্বে জর্জরিত। নিজেরাই কাটমানি নিয়ে লড়াই করছে। আর এরই প্রতিফলন হয়েছে কালকে রাতের ঘটনা।