নারকীয় নির্যাতনের মুখে পড়ার পরে কেটে গিয়েছে ১২টা দিন। তার মধ্যে হাওড়ার পাঁচলায় ভোট গ্রহণের দিন বিজেপি প্রার্থীকে মধ্যযুগীয় পন্থায় অত্যাচারের অভিযোগ নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে রাজনীতির অঙ্গনে। বিষয়টি নিয়ে কথা উঠেছে দিল্লিতেও। পালটা সাংবাদিক বৈঠক করেছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি। তার পরেও আতঙ্ক কাটছে না আক্রান্ত প্রার্থী ও তাঁর স্বামীর। শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আক্রান্ত বিজেপি প্রার্থীর স্বামী বললেন, ‘স্ত্রীর সঙ্গে যা ঘটেছে তা মুখে বলতে পারব না।’
এদিন সাংবাদিকরা পাঁচলায় আক্রান্ত মহিলা বিজেপি প্রার্থীর বাড়িতে গিয়ে দেখেন তখনও পরিবারের সবার চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। সাংবাদিকদের অনেক অনুরোধে প্রকাশ্যে আসতে রাজি হন তাঁরা। এর পর নির্যাতিতা বলেন, ‘৮ জুলাই বেলা ১১টা থেকে ভোটকেন্দ্রে প্রচুর ঝামেলা হচ্ছিল। আমি ভোটকেন্দ্রেই ছিলাম। এর মধ্যে কয়েকজন আমার চুলের মুঠি ধরে স্কুলের সিঁড়ি থেকে আমাকে ঠেলে ফেলে দেয়। এর পর আমার চুলের মুঠি ও শাড়ি ধরে টানে। তার পর ভোটকেন্দ্রের আসপাশের বাড়িগুলি ভাঙচুর করে তৃণমূল। গতবার পঞ্চায়েত ভোটেও এরকম হয়েছিল। এবারও এরকম হয়েছে। আমি এরকম চাই না। আমার এলাকায় ভোট হলে সন্ত্রাস হোক, মারধর খাক ছেলেরা। বা বাড়ি ভাঙচুর হোক। এটা গরিব এলাকা। সবাই দিন আনে দিন খায়। প্রচণ্ড আতঙ্কে আছি। পুলিশ কী সাহায্য করবে, পুলিশ নিজেই তো মার খেয়ে চলে গেছে। আমি পুলিশে অভিযোগ করেছি।’
আক্রান্তের স্বামী বলেন, ‘৮ জুলাই যা ঘটেছে তা মুখে বলার মতো নয়। সেই ছবি আপনি দেখলে বুঝতে পারবেন। দল আমার পাশে আছে। ২টো পঞ্চায়েত নির্বাচনে যা অত্যাচার হয়েছে আমাদের সহ্য করার ক্ষমতা নেই। কাল রাত পর্যন্ত আমরা আতঙ্কে ছিলাম। আজও আছি। ২১ জুলাই বলে ওদের ছেলেরা এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।’
শঙ্কিত মুখে তিনি বলেন, ‘মারধর, লুঠ, প্রার্থীকে মারধর, প্রার্থীকে ঠেলে বাইরে বার করে দেওয়া। এসব নিয়ে আমি বেশি বলতে চাইছি না। কয়েকটা দিন কাটিয়েছি। আতঙ্কে আছি। আমাদের ছেলেদের এখনও মারধর করছে। আমার বুথের ওখানে চলে যান, পাঁচলা থানায় যান বলে দেবে। পুলিশ অফিসাররা সেদিন মার খেয়ে পালিয়েছে’।
আক্রান্ত বিজেপি প্রার্থীর স্বামীর দাবি, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকা মতো মহিলা নন। বিজেপি খুব ভালো দল। বিজেপি ভাল কাজ করছে। আমার গ্রামে আমি সন্ত্রাস হঠাতে চাই, শান্তি ফেরাতে চাই’।