সদ্য মুর্শিদাবাদের কিরীটেশ্বরী গ্রাম সেরা পর্যটন স্থানের তকমা পেয়েছে। তবে তার রেশ কাটতে না কাটতেই বাংলায় এল আরও পুরষ্কার। এবার বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের সহায়তায় কৃষির উপর এল সাফল্য। তাঁদের সাহায্যে বিশেষ ধরনের কাজের স্বীকৃতি হিসাবে একটি গোষ্ঠী এবং একজন কৃষক রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরষ্কার পেলেন। এই দু’টি পুরষ্কারের নাম— ‘উদ্ভিদ প্রজাতি সুরক্ষা গোষ্ঠী পুরষ্কার’। আর ‘উদ্ভিদ প্রজাতি সুরক্ষা কৃষক সম্মান’। ১২ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান সংস্থার কনভেনশন সেন্টারে এই দু’টি পুরষ্কার তুলে দিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
এদিকে এই পুরষ্কার বাংলার কাছে বিশেষ সম্মানের। রাজ্যের উপর আরও একটি পালক যুক্ত হল। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার–সহ অন্যান্যরা। জাতীয়স্তরের এই দু’টি পুরষ্কার একধাক্কায় বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়– সহ বাংলার মুখ উজ্জ্বল করল। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম সাহা গোটা বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে এটা একটা বড় সাফল্য। জাতীয় পুরষ্কার পাওয়ায় ফসলের দেশীয় প্রজাতি সংরক্ষণের কাজে কৃষকরা আরও উৎসাহ পাবেন।’
অন্যদিকে এই খবর পৌঁছে গিয়েছে রাজ্য সরকারের কাছেও। উদ্ভিদ প্রজাতি সুরক্ষা পুরষ্কার হাতে এসেছে বাঁকুড়ার ছাতনার ‘দলপুর শ্রী শ্রী জ্ঞানানন্দ সরস্বতী আশ্রম’–এ। তারা টানা ৯ বছর ধরে নিজস্ব উদ্যোগে এবং বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বাংলার সুগন্ধি ধান’ প্রকল্পে প্রযুক্তি সহায়তায় কাজ করেছে। তাতে প্রায় ৬০ প্রজাতির দেশীয় ধান, ৪২ ওষুধ প্রস্তুতকারক গাছ, ৪০ ধরনের দেশীয় সবজি–সহ নানা প্রকারের মিলেট ও গোখাদ্য সংরক্ষণের কাজ করছেন। এই উদ্ভিদ প্রজাতি সুরক্ষা কৃষক সম্মানটি পেয়েছেন নদিয়ার হাঁসখালির নিমাই মণ্ডল। তিনি বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় ১৫টি দেশীয় ধানের প্রজাতি সংরক্ষণ করছেন। আবার চাল বিপণনের ক্ষেত্রে উদ্যোগও নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ‘কে একটা ভাইপো আছে কোটি টাকার বাড়ি’, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যের পাল্টা দিলেন কুণাল
আর কী জানা যাচ্ছে? বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার সুগন্ধি ধান প্রকল্পের মুখ্য বিজ্ঞানী অধ্যাপক মৃত্যুঞ্জয় ঘোষের সাহায্যে ‘প্রোটেকশন অফ প্লান্ট ভ্যারাইটিস অ্যান্ড ফার্মার্স রাইটস অথরিটি’র নয়াদিল্লির মূলকেন্দ্রে পুরষ্কারের আবেদন জানিয়ে জমা দেওয়া হয়। সেটি রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারের জন্য এই বছর নির্বাচিত হয়। গোষ্ঠী পুরষ্কার বাবদ ১০ লক্ষ টাকা এবং কৃষক সম্মানের জন্য এক লক্ষ টাকা পেয়েছেন তাঁরা। অধ্যাপক মৃত্যুঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘এই ধরনের পুরষ্কার আমাদের কাছে গর্বের।’ তবে এই পুরষ্কারের মধ্যে দিয়ে বাংলার কৃষিতে সাফল্য এল বলে মনে করা হচ্ছে।