শীতলকুচি সফরে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। গোলকগঞ্জে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে দেখানো হল কালো পতাকা। পড়লেন 'গো ব্যাক স্লোগান'-এর মুখে। নাগরিক মঞ্চের তরফে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার কোচবিহারে পৌঁছেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন জগদীপ ধনখড়। তাঁর প্রশ্ন, ‘সাংবিধানিক পদকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী?’ তাঁর মতে, এভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যে হিংসা পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রীর উস্কানিকেই দায়ী করেছেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন,‘বাংলা ছাড়াও চার রাজ্যে নির্বাচন হয়েছে। কোথাও কোনও রক্তপাত হয়নি। প্রচারে মুখ্যমন্ত্রীর উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরেই রাজ্যে হিংসা হয়েছে।’
শীতলকুচিতে ভোট-পরবর্তী হিংসার শিকার বিজেপি কর্মী মানিক মৈত্রের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্যপাল। কিন্তু বাড়িতে কেউ ছিলেন না। আশপাশের এলাকার প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সকালেও বাড়ির প্রত্যেককে দেখা গিয়েছিল। আচমকা সবাই কোথায় বেপাত্তা হয়ে গেলেন, তা কেউ ঠাওর করতে পারছেন না।
বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে সঙ্গে নিয়ে কোচবিহারের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনে যান রাজ্যপাল। মাথাভাঙার বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি।এলাকায় আক্রান্ত পরিবারের এক মহিলা রাজ্যপালের কাছে বিচার চেয়ে কাঁদতে থাকেন। আরও একজন মহিলাকে রাজ্যপালের পায়ে পড়তেও দেখা যায়। বিপর্যস্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। যেসব এলাকায় 'ভাঙচুর', 'হামলা' চালানো হয়েছে, তা ঘুরে দেখেন তিনি।
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালে টুইটে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রাজ্যপাল। টুইটে তিনি লেখেন, ‘এই ধরনের অভূতপূর্ব সংকটের সময় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা প্রয়োজন।রাজ্যপালকেও সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে রাজ্যকে। ভোট-পরবর্তী হিংসার মধ্যে দাঁড়িয়ে এটা চটকদারি দেখানোর সময় নয়। রাজ্যপাল–মুখ্যমন্ত্রী দু'জনের পদই সাংবিধানিক। সবাই সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ। শপথের পর আপনিও সংবিধান মানতে বাধ্য। সংবিধানকে অবহেলা করা যায় না।’ একইসঙ্গে রাজ্যপাল টুইটে লেখেন,‘খেয়াল করুন, চারটি রাজ্য ও কেন্দ্রীয়শাসিত এলাকায় ভোট হচ্ছে।শুধুমাত্র এখানেই হিংসার ঘটনা ঘটেছে।নিজেদের পছন্দমতো ভোট দেওয়ার মূল্য চোকাচ্ছেন মানুষ।কীভাবে এই পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়া যায়?এতে কী গণতন্ত্র ধ্বংস হচ্ছে না?’ যদিও রাজ্যপালের এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।তিনি জানান,‘সাংবিধানিক রীতি ভাঙছেন রাজ্যপালই।’