ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় পশ্চিমবাংলার এখনও পর্যন্ত ১০৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। এই জেলা থেকে ট্রেন দুর্ঘটনায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ১৯ জন এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন। বেঙ্গালুরু–হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং শালিমার–চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস থেকে ১০২ জন যাত্রী ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাড়িতে ফিরেছেন।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগ করমণ্ডল এক্সপ্রেসে করে চেন্নাই যাচ্ছিলেন। তাঁদের মধ্যে কেউ ক্ষেত মজুর আবার কেউ নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এক একটি দলে তাঁরা ট্রেনে করে যাচ্ছিলেন বা ফিরে আসছিলেন। অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হয়েছিল এই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের। তবে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা মুহুর্তে সবকিছু বদলে দিল। সুন্দরবনের অনেকেই প্রতিবছর বর্ষায় বেশি উপার্জনের লক্ষ্যে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে পাড়ি দিয়ে থাকেন। সেরকমই গোসাবার বাসিন্দা রিনা মণ্ডল ১১ জনের একটি দল যাচ্ছিলেন অন্ধপ্রদেশে। করমণ্ডল এক্সপ্রেস করে যাচ্ছিলেন তাঁরা। রিনা জানান, প্রতিবছর বর্ষা হলেই তিনি দক্ষিণ ভারতে ধান রোপন করার কাজে যান। ৪৫–৬০ দিন থেকে ৪০–৫০ হাজার টাকা আয় হয়। তবে ট্রেন দুর্ঘটনায় তিনি পায়ে আঘাত পেয়েছেন। বর্তমানে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছেন ওই মহিলা। তবে ট্রেন দুর্ঘটনায় তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন। তাঁদের দলের আরও দুজন নিখোঁজ রয়েছেন।
বালিয়ারা গ্রামের আরেক পরিযায়ী শ্রমিক বুদ্ধদেব দাস (২১) মাথায় ও হাতে আঘাত পেয়েছেন। সুন্দরবনের অন্যান্য যেমন কুসুমতলা থেকে ৯ জনের একটি দল যাচ্ছিলেন। তবে কোনওভাবে তাঁরা বেঞ্চে ফিরেছেন। ঘোড়ামারা থেকে আর একটি দল দুর্ঘটনার একদিন আগে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে করে চেন্নাইতে নিরাপদে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে। ঘোড়ামারার পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জীব সাগর বলেন, ‘এটা ভাগ্যের ব্যাপার যে আমাদের দ্বীপের একজনও গ্রামবাসী ওই ট্রেনে ছিল না।’
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup