রাত পোহালেই মকর সংক্রান্তি। শুক্রবার শুরু হয়ে যাবে গঙ্গাসাগরের পুণ্যস্নান। আর বৃহস্পতিবার গঙ্গাসাগরে বাধল বিপত্তি। সেখানে এক শিশু ও মহিলার গায়ে আগুন লেগে যায়। যদিও শিশুর তেমন কিছু হয়নি। তবে রাজ্য সরকারের দ্রুত তৎপরতায় ওই মহিলাকে গঙ্গাসাগর থেকে এয়ারলিফ্ট করে পাঠানো হল হাওড়ায়। শুধু তিনি নন, সবমিলিয়ে মোট ৩–৪ জনকে এয়ারলিফ্ট করা হয়েছে বলে খবর।
ঠিক কী ঘটেছে গঙ্গাসাগরে? জানা গিয়েছে, স্বর্ণলতা মণ্ডল (৪৫) নামের এক মহিলা তার শিশুকে নিয়ে গঙ্গাসাগরের শীতের রাতে আগুন জ্বেলে আগুন পোহাচ্ছিলেন। আচমকাই আগুন তাঁর পোশাকে লেগে যায়। পোশাক থেকে মুহূর্তে তার শরীর জ্বলতে থাকে। ওই আগুনে তার শরীরের প্রায় ৫৪% অগ্নিদগ্ধ হয়ে যায়। সেই অবস্থায় তাঁকে আপদকালীন চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে গঙ্গাসাগর থেকে হাওড়া ডুমুরজলা হেলিপ্যাডে আনা হয় এবং সেখান থেকেই গ্রিন করিডর করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁকে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিন এয়ারলিফ্ট করা হয়েছে আরও একজনকে। যার ফ্র্যাকচার হয়েছে। আরও ১–২ জনকে এয়ারলিফ্ট করা হচ্ছে। এই ঘটনায় চিকিৎসক জানিয়েছেন, অগ্নিদগ্ধ মহিলার অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। চিকিৎসক সবুজ বালা জানান, ওই মহিলা গঙ্গাসাগর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা। তিনি মেলাতে এসেছিলেন। গতকাল রাতে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে আগুনের সামনে বসে উষ্ণতা নিচ্ছিলেন। কোলে তার একটি শিশু সন্তান ছিল। আচমকাই হওয়ার দাপটে আগুন তার শীতের পোশাকে ধরে যায়।
করোনাভাইরাস রুখতে ভিড়ের মধ্যে স্যানিটাইজার স্প্রে করা হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যেই গঙ্গাসাগরের ভিড় দেখে উষ্মাপ্রকাশ করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল। ভিড় দেখলেই তা সরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা। গঙ্গাসাগরে আর পুণ্যার্থীদের ভিড় চাইছে না প্রতিনিধি দল। প্রশাসনকে সেই মর্মে অনুরোধও করেছেন তাঁরা। সাগরতটে নজরদারি চালাচ্ছেন দুই মন্ত্রী শশী পাঁজা ও বঙ্কিম হাজরাও।
উল্লেখ্য, গঙ্গাসাগর মেলাতে ইতিমধ্যেই ভিড় জমাতে শুরু করেছেন পুণ্যার্থীরা। শুক্রবার তাঁরা গঙ্গাসাগরে স্নান সারবেন। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোভিড বিধিনিষেধ মেনে স্নান সম্পূর্ণ করতে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের নিয়োজিত কমিটির পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে গঙ্গাসাগরে থাকার জন্য ইতিমধ্যেই বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।