শ্রমিক অসন্তোষের জেরে গত ১১ দিন ধরে বন্ধ ছিল জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জের সুখানী চা বাগান। এরফলে পুজোর আগেই কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন শ্রমিকরা। তার ফলে তাঁরা ব্যাপক সমস্যায় পড়েছিলেন। এরপর থেকেই মালিক–শ্রমিক পক্ষের সঙ্গে লাগাতার বৈঠকে বসেছিল প্রশাসন। অবশেষে সমাধানসূত্র মিলল। ১১ দিন পর শনিবার থেকে খুলে গেল চা বাগান। এরফলে স্বাভাবিকভাবেই পুজোর আগে হাসি ফুটল শ্রমিকদের মুখে।
আরও পড়ুন: রাতে থাকুন মেম সাহেবের চা বাগানে! জানলা খুললেই মন ভালো করা অপরূপ দার্জিলিং
জানা গিয়েছে, গত ১১ দিন আগে মালিক–শ্রমিক অসন্তোষের বন্ধ হয়ে যায় চাবাগান, যার ফলে বিপাকে পড়তে হয় চা শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের। কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন প্রায় ৩০০ শ্রমিক। তার ফলে তাঁরা অনিশ্চিততার মুখে পড়েছিলেন। এরপরেই জলপাইগুড়ি জেলার শ্রম দফতরে উদ্যোগে বেশ কয়েকবার মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার প্রচেষ্টা করা হয়। দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে মালিকপক্ষ শনিবার সকাল থেকে বাগান খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্ত মতো শনিবার সকাল থেকে চা বাগান খুলে দেওয়া হয়। বাগান খুলে যাওয়ায় সাত সকালে কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। এদিন বাগানের শ্রমিকরা জানান, পুজোর আগে বাগান খুলে যাওয়ায় সকলেই খুশি। শ্রম দফতর ও মালিক পক্ষকে ধন্যবাদ জানান তাঁরা।
শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে বাগান খুলে যাওয়ায় খুশি শ্রমিকদের পরিবারও। অন্যদিকে, তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা তপন দে জানান শুক্রবার দীর্ঘ আলোচনার পর বাগান খোলার সিদ্ধান্ত হয়। পুজোর আগে শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে আপাতত বাগান খুলে দেওয়া হল। পুজোর পরে আবারও দু পক্ষের আলোচনা করে সমস্যা সমাধান করা হবে। প্রসঙ্গত, মালিকপক্ষের দাবি ছিল দৈনিক ৮ ঘণ্টা করে কাজ করতে হবে। অন্য দিকে পালটা শ্রমিকদের দাবি ছিল সেই মতো তাঁরা কাজ করতে প্রস্তুত। কিন্তু সরকার নির্ধারিত নূন্যতম আড়াইশো টাকা করে দৈনিক তাঁদের দিতে হবে। এর পাশাপাশি চা শ্রমিকদের পিএফ চালু করা এবং যারা গ্র্যাচুয়িটি পাননি তাঁদের গ্র্যাচুয়িটি দেওয়ার দাবি জানান শ্রমিকরা। শুক্রবার বৈঠকে ঠিক হয়েছে, শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা করে কাজ করবেন এবং তার পরিবর্তে মালিকপক্ষ দৈনিক ২৫০ টাকা করে মজুরি দেবেন। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত মজুরির দাবি করেছেন শ্রমিকরা। তাছাড়া মালিক পক্ষেরও কিছু দাবি রয়েছে। পুজোর পরে এনিয়ে আরও একটি বৈঠক হবে। সেই বৈঠকে পরবর্তী আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে।