সাত সকালে উদ্ধার হল শিক্ষক এবং তাঁর দুই সন্তানের মৃতদেহ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, দুই সন্তানকে বিষ দিয়ে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই শিক্ষক। ঘটনাটি নৈহাটির শিবদাসপুর এলাকায়। শান্ত স্বভাবের ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন ওই শিক্ষক। ফলে নিজের দুই সন্তানকে খুন করে কীভাবে ওই শিক্ষক আত্মঘাতী হলেন? তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। মৃত শিক্ষকের নাম জ্যোতিপ্রকাশ মণ্ডল। তাঁর ছয় বছরের ছেলের নাম জয়মাল্য অন্দল এবং ৯ বছরের মেয়ের নাম লাজবন্তী।
আরও পড়ুন: বোর্ডে সুইসাইড নোট লিখে আত্মঘাতী হলেন স্কুল শিক্ষক, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই একটি গাছ থেকে ওই শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। তার ঠিক পাশেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল দুই ভাই বোনের দেহ। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, স্ত্রী লাবনী মণ্ডলের সঙ্গে বেশ কয়েকদিন ধরে আলাদা থাকছিলেন জ্যোতিপ্রকাশ। কিন্তু, কেন এই আত্মহত্যা তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। স্থানীয়দের বক্তব্য, ওই শিক্ষক সম্প্রতি এক মহিলার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন। তাই নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রতিনিয়ত অশান্তি লেগেই থাকত। ঘটনার কথা জেনে সম্প্রতি তার সঙ্গে আলাদা থাকছিলেন তাঁর স্ত্রী। তবে ছেলেমেয়েকে নিয়ে থাকছিলেন ওই শিক্ষক। গয়েশপুর হাইস্কুলের শিক্ষক জ্যোতিপ্রকাশ এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে মানসিক অবসাদে ছিলেন। স্থানীয়দের অনিকের দাবি, তাঁর স্ত্রী তাঁর কাছ থেকে ডিভোর্স চেয়েছিলেন। কিন্তু তা একেবারে মেনে নিতে পারেননি শিক্ষক। মানসিক অবসাদে প্রথমে নিজের দুই সন্তানকে খুন করেন শিক্ষক। তারপরে গাছের সঙ্গে গলায় দড়ি বেঁধে আত্মঘাতী হন।
সকালে স্থানীয়রা প্রথমে তিনজনের মৃতদেহ দেখতে পান। তারাই শিক্ষকের পরিবারের পাশাপাশি পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান শিক্ষকের স্ত্রী। দুই সন্তানের মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন তিনি। কার্যত কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। এদিকে, পুলিশও খবর পেয়ে ঘটেনাস্থলে পৌঁছয়। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। পাশাপাশি এই ঘটনায় শিক্ষকের পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।