ধরন পাল্টাচ্ছে সাইবার অপরাধ। প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়ে ঋণ নেওয়ার কথা বলা হয়। তারপর তা শোধ করার হুমকি ফোন আসতে থাকে। ভয়ে টাকা দিতে শুরু করেন শিক্ষক। শুধু তাঁকেই ফোন করে উত্যক্ত করা নয়, প্রতারণার জাল গড়িয়েছে শিক্ষকদের আত্মীয়স্বজনদের কাছেও। ইতিমধ্যে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
শিক্ষকের বয়ান অনুযায়ী, প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়ে ঋণ নেওয়া ও তা পরিশোধ করার কথা বলা হয়, তখন তিনি বিষয়টিতে খুব একটা বেশি আমল দেননি। এরপর হোয়াটস অ্যাপে ফোন করে ভয় দেখানো শুরু হয়। বলা হয়, তাঁর ব্যাঙ্ক ডিটেলস থেকে শুরু করে সব তথ্যই ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তিটির কাছে আছে। এরপরই শিক্ষক তিলক রাজ ঘোষ ভয়ে টাকা দিতে শুরু করেন। এক মাসে ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। শিক্ষক জানান, ‘আমাকে পুরো ব্ল্যাকমেলিং করে টাকা নেওয়া হচ্ছে। কোনও ব্যাঙ্ক স্টেটমোন্ট পাঠানো হচ্ছে না। হোয়াটসঅ্যাপের ডিপিতে কথনও পুলিশের ছবি, নয়ত কখনও সিবিআইয়ের ছবি থাকছে। ফোনে কোনও এক হিন্দিভাষীর কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে।’
প্রতারকরা শুধু শিক্ষককেই নয়, তাঁর আত্মীয়দের কাছে ফোন করেও টাকা চেয়েছে। ফোন করে তাঁদেরকেও ভয় দেখানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, তিলকবাবু ঋণ নিয়েছেন, গ্যারেন্টার হিসাবে তাঁদের নাম রয়েছে। তিলকবাবু ঋণ নিয়েছে, কিন্তু এখনও শোধ করেননি। এই ঘটনায় যথেষ্ট আতঙ্কিত তিলকবাবু ও তাঁর আত্মীয়রা। ভাটপাড়া থানায় ইতিমধ্যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কে বা কারা এই ঘটনার পিছনে রয়েছে, তার কোনও হদিশ পায়নি পুলিশ।
তবে সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথমে একটি মেসেজ পাঠিয়ে একটি লিঙ্কে ক্লিক করতে বলা হয়। তারপর ওই লিঙ্কে ক্লিক করলেই আপনা আপনি একটা অ্যাপ ইনস্টল হয়ে যাচ্ছে। ইমস্টল হওয়ার পরই সব তথ্য প্রতারকদের হাতে চলে যাচ্ছে। জানা গিয়েছে, এই লোন অ্যাপ কোম্পানিগুলির আদৌ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গাইডলাইন মেনে চলে না। করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকেই এই ধরনের অ্যাপ বেড়ে গিয়েছে। এর মাধ্যমে মানুষকে ব্ল্যাকমেলিং করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।