টানা চার মাস গা–ঢাকা দিয়ে থাকার পর সুপ্রিম কোর্টের কড়া নির্দেশে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে হাজিরা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সৈকত চট্টোপাধ্যায়। দম্পতির আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত যুব তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান। তবে সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের আবেদন শুনলেন না জলপাইগুড়ির জেলা জজ অরুণকিরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আজ, সোমবার সকালে জেলা আদালতে আত্মসমর্পণ করতে এলেন জলপাইগুড়ির যুব তৃণমূল জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়।
এদিকে সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের আবেদনে সাড়া দিলেন না জলপাইগুড়ির জেলা জজ অরুণকিরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা জজের কাছে সৈকত আবেদন করেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তিনি উপস্থিত হয়েছেন। তদন্তে সহযোগিতা করবেন। তাই তাঁকে রক্ষাকবচ দেওয়া হোক। জেলা জজ স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দেন, এই মামলা শোনার এক্তিয়ার তাঁর নেই। সিজেএম আদালতেই তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তখনও বারবার আবেদন শোনার আর্জি জানাতে থাকেন সৈকত। কিন্তু শোনেননি জেলা জজ। সিজেএম আদালতেই সৈকতের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল।
অন্যদিকে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি আত্মহত্যা করেন জলপাইগুড়ি শহরের পাণ্ডাপাড়ার বাসিন্দা ভট্টাচার্য দম্পতি। তারপর গত ১৬ জুন থেকে বেপাত্তা ছিলেন সৈকত চট্টোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন তিনি। তবে সর্বোচ্চ আদালত তা খারিজ করে দেয়। আগামী ২৬ অক্টোবর তারিখের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ জারি করার পর জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে হাজিরা দিলেন সৈকত। অপর্ণা ভট্টাচার্য এবং স্বামী সুবোধ ভট্টাচার্য ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়ের ভাই এবং ভাইয়ের বউ। এই ঘটনার পর শিখাদেবী, সৈকত চট্টোপাধ্যায়–সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত গোটা বাজার, দুর্গাপুজোর আগে বড় ক্ষতি নকশালবাড়ির ব্যবসায়ীদের
তারপর থেকেই গা–ঢাকা দেন সৈকত চট্টোপাধ্যায়। তবে বেশ কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। কিন্তু সৈকত আত্মগোপন করার ফলে গ্রেফতার করা যায়নি তাঁকে। পরে আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানান সৈকত। সিজেএম আদালত আগেই সৈকতের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। তাই সৈকত চট্টোপাধ্যায় জামিন পাবেন কিনা সেটা এখন বড় প্রশ্ন। সৈকত কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করলে তা খারিজ হয়ে যায়। এদিকেপুলিশও সমান্তরালভাবে এই ঘটনার তদন্ত করছে। বারবার বাড়িতে হানা দিয়েও সৈকতের খোঁজ পায়নি পুলিশ। এরপর তার নামে হুলিয়া জারি করার অনুমতি চেয়ে আদালতে যায় পুলিশ। কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চে ধাক্কা খেয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান সৈকত। সুপ্রিম কোর্টেও আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হতেই আদালতে আত্মসমর্পণ ছাড়া তাঁর আর কোনও উপায় ছিল না।