সন্দেশখালি কাণ্ডে এবার রাজ্যের মন্ত্রী প্রকাশ্যে তোপ দাগলেন শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে। আর তারপর থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তাহলে কি শাহজাহানের পাশে দল নেই? রেশন দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে শাহজাহান শেখের অনুগামীদের হাতে বেধড়ক মারধর খেয়েছিলেন ইডির অফিসাররা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। শুধু তাই নয়, তাঁদের মারধর ও গাড়ি ভাঙচুর করে এলাকাছাড়া করা হয়। এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজ্য–রাজনীতি। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নরমে গরমে বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে। তখন রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী তোপ দাগলেন শাহজাহানের বিরুদ্ধে।
এদিকে শাহজাহানকে এখন নাগালে পাওয়া যাচ্ছে না। রাজ্যপাল কড়া মন্তব্য করছেন। পুলিশ গ্রেফতার করতে বলছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। এই আবহে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী সন্দেশখালি কাণ্ড নিয়ে বলেন, ‘শাহজাহান শেখদের দলের জন্ডিস বলব–ক্যান্সার বলব। ক্যান্সার তো দুরারোগ্য, মরে যাবে। আর জন্ডিস সারবে না। জন্ডিস না সারলে সে মরবে আরও ১০জন মরবে। ওরা দলের জন্ডিস।’ এই মন্তব্য নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তবে গোপন ডেরা থেকে অডিয়ো বার্তা দিয়েছেন শাহজাহান। সেই বার্তায় বলেছেন, একদিন তো মরতেই হবে। ভয় পাওয়ার দরকার নেই।
অন্যদিকে ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ নিয়ে গিয়েছিলেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তখন তাঁর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ মন্ত্রীর। আর ওই ঘটনার সঙ্গে শাহজাহান জড়িত ছিল বলে অভিযোগ মন্ত্রীর। হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, ‘প্রায় লক্ষাধিক টাকার ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন আমাকে পুলিশের সামনে হেনস্থা করেছিল। চালে কিছু কাঁকড় থাকে। একটু ঝেরে খেলে ভাতটা ভাল খাওয়া যায়। সিপিএমের জমানায় হার্মাদ বাহিনী থেকে এই দলে এসেছে। সেই বদ রক্তের কারণে ক্ষতি আরও বেশি হচ্ছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, এরকম অপরাধীদের শাস্তি হোক। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। যাতে ভাল মানুষরা দল করতে পারেন।’
আরও পড়ুন: সন্দেশখালি ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী–রাজ্যপাল কথা, রিপোর্ট–সহ তলব স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজিকে
এছাড়া এই ঘটনার জেরে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব এবং ডিজিকে তলব করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘আমি বিশ্বাস নিয়ে বলতে পারি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ ছিল না। শাহজাহান শক্তির বড়াই দেখাতে গিয়ে ফেঁসেছে, ফাঁসুক। দল দলের জায়গায় কাজ করুক। দল তার সঙ্গে নেই। কেউ যদি মনে করে আমি আইনের ঊর্ধ্বে, তবে তাকে শাস্তি পেতেই হবে। মারধর করে অন্যায় করেছে। তৃণমূল দায়ী নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক দায়ী নন। যে করেছে সে দায়ী। ঘেরাও পর্যন্ত চলতে পারত। অফিসারদের মারধর করা বৈধ কাজ নয়।’