মালদায় এক গৃহবধূ রোগীকে খাটিয়া করে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনা জোর আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। যদি ভিডিয়ো’র সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল। তবে এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এই আবহে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর মন্তব্যে তৈরি হল তুমুল বিতর্ক। ভাগ্যে ছিল বলেই মৃত্যু হল ওই মহিলার এমন মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও প্রাণে বাঁচানো যায়নি গোবিন্দপুর–মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মালডাঙা গ্রামের গৃহবধূ মামনি রায়কে।
এদিকে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর দাবি, খারাপ রাস্তা জন্য নয়, মামনির মৃত্যুর জন্য দায়ী তাঁর ভাগ্য। এই মন্তব্যই বিরোধীরা মেনে নিতে পারেননি। টুইট খোঁচা দিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। জ্বরে ভুগছিলেন মালডাঙা গ্রামের গৃহবধূ মামনি রায়। তাঁর শারীরিক অবস্থারও অবনতি হয়। হাসপাতালে নিয়ে যেতে গেলে খোঁজ করা শুরু হয় অ্যাম্বুলেন্সের। পরিবারের লোকজন নানা চেষ্টা করলেও তা পাননি বলেই অভিযোগ। আরও অভিযোগ, এলাকার রাস্তা এতটাই বেহাল যে গ্রামে আসতে পারেনি কোনও অ্যাম্বুলেন্সই। ততক্ষণে আরও খারাপ হয় মামনি দেবীর শারীরিক অবস্থা। উপায় না দেখে খাটিয়াতে করেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন পরিবারের সদস্যরা।
অন্যদিকে এই ঘটনা কেউ বা কারা ভিডিয়ো করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেয়। তা ভাইরাল হয়ে যায়। রাস্তা নিয়ে তখন রাজ্য সরকারকে দোষারোপ করতে থাকেন কিছু মানুষজন এবং বিরোধীরা। তারই জবাব দেন সিদ্দিকুল্লা। মন্ত্রী আজ, শনিবার এই ইস্যুতে বলেন, ‘একশোর মধ্যে একজনের অবস্থা যদি এরকম হয় তাহলে ৯৯টা খারাপ বলব কেন? আপনি যেমন প্রশ্ন করছেন, সব খারাপ। কারও শরীরে হাতে কিছু একটু অসুস্থতা হলে আমরা কি বলব তাঁর মাথা খারাপ হয়েছে? ওটা আমাদের কাছে লিখলে, বললে রাস্তাটা সারিয়ে দেব। মৃত্যু ওই কারণে নয়। তার ভাগ্যে ছিল, রাস্তার জন্য মৃত্যু হয় না। ওর ভাগ্যে ছিল তাই মারা গিয়েছে। রাস্তার জন্য মারা যায়নি। এই সব মিডিয়ার অনুগ্ৰহ আমাদের প্রতি, খুঁচিয়ে বিষয়গুলিকে সামনে আনা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: রাত পোহালেই শুরু চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর, স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত
এই মন্তব্যে এখন তোলপাড় রাজ্য–রাজনীতি। এই ঘটনার পর প্রশাসনের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন মৃতার বাড়ির লোকজন। তখন এমন মন্তব্য কার্যত বেমানান বলে মনে করা হচ্ছে। তাও আবার মন্ত্রীর মন্তব্য। সুতরাং গোটা বিষয়টি নিয়ে এখন তেতে উঠেছে বাতাবরণ। গোবিন্দপুর–মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মালডাঙা থেকে আইগনতারা পর্যন্ত দীর্ঘ ৫ কিমি রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় গ্রামবাসীদের। স্ত্রীর মৃত্যুর পর স্বামী কার্তিক রায় আক্ষেপ করে বলেন, ‘রাস্তা ঠিক থাকলে আমার স্ত্রীকে মরতে হতো না’।