কচুরিপানা কী শিল্প হয়ে উঠতে পারে? বাংলা জুড়ে এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। কারণ শিল্প সম্মেলনে এসে কচুরিপানার সামগ্রী তৈরি এবং তা বিক্রি করে লাভবান হওয়ার পথ বাতলালেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। কচুরিপানা থেকে কর্মসংস্থানের কথা শুনে অনেকেই বেশ স্তম্ভিত। কারণ এই সম্মেলনে তিনি জানান, এই শিল্পের জন্য কাঁচামাল কিনতে হবে না। কচুরিপানা জলেই পাওয়া যায়। আর তা তুলে শুকিয়ে বিক্রি করলেই কেজি প্রতি ২৫ টাকা মিলবে।
এই ২৫ টাকা করেই একদিন বিন্দু বিন্দু করে সিন্ধু হবে বলেও মনে করছেন অনেকে। তাতেই চমকেছেন সম্মেলনে আসা আধিকারিকরা। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগর রবীন্দ্রভবনে রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি দফতরের পক্ষ থেকে শিল্প সমন্বয় সম্মেলনে (সিনার্জি) আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সংস্থা এবং ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এমনকী উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের একাধিক মন্ত্রীও। সেখানেই পশুপালন দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ কচুরিপানা শুকিয়ে বিক্রি করে লাভবান হওয়ার কথা জানান।
ঠিক কী বলেছেন মন্ত্রীমশাই? এদিন সাংবাদিকদের স্বপনবাবু বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে খাল–বিল উৎসব পালন করি। রাজ্যের যে একাধিক জলাশয় আছে সেখানে প্রচুর কচুরিপানা জন্মায়। মাছ বড় করতে গেলে জলাশয় থেকে কচুরিপানা তুলতে হবে। আমাদেরই ওখানকার একটা ছেলে কচুরিপানা দিয়ে নানা সামগ্রী তৈরি করতে শুরু করেছে। তা দিয়ে গয়নার বাক্স, ফল রাখার পাত্র, টেবিলের উপরে গরম জিনিস রাখার ম্যাট তৈরি করা যায়। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কচুরিপানা তুলে শুকিয়ে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা সম্ভব। আর বাজারে বিক্রি করে স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ থাকছে।’
এই ভাবনাকে অনেকেই সাধুবাদ দিলেও তা শিল্প সম্মেলনে বলা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। যদিও স্বপনবাবুর সওয়াল, ‘সরকারকে বলব, এদের জন্য যদি কিছু করার কথা।’ এই বক্তব্য শুনে সম্মেলনে উপস্থিত অনেকেই হতাশ। উল্লেখ্য, আগামী ২ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। সেখানে তাঁতি ও হস্তশিল্পীদের ‘আর্টিজ়ান ক্রেডিট কার্ড’ দেওয়া হবে। কিন্তু কচুরিপানা তুলে তা শুকিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী বানিয়ে বিক্রি করতে ঋণ লাগলে তা মিলবে কিনা তা খোলসা করে কিছু বলেননি মন্ত্রী।