বিজয়া দশমীর রাতে প্রতিমা নিরঞ্জন করতে গিয়ে হরপা বানের সম্মুখীন হতে হয়। আর মাল নদীতে হড়পা বানের জেরে মারা গিয়েছেন আটজন। তখনই শোকের ছায়া নেমে আসে মালবাজারে। তাই জলপাইগুড়িতে পুজোর কার্নিভাল বাতিল করা হয়েছে। অন্যান্য জেলায় শুক্রবার পুজোর কার্নিভাল হয়েছে। আজ, শনিবার কলকাতার রেড রোডে পুজোর কার্নিভাল হতে চলেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর কার্নিভাল নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই খোঁচা দিয়েছেন। বাম যুব নেতা প্রতিকূর রহমান থেকে বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়—শোকের সময় কার্নিভাল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এবার পাল্টা যুক্তি দিলেন রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ।
ঠিক কী লিখেছেন ফেসবুক পোস্টে? এবার বিরোধীদের জবাব দিয়েছেন মন্ত্রী ফেসবুক পোস্ট করে। সেখানে সমালোচকদের খোঁচা দিয়ে তিনি লেখেন, ‘শোক ব্যাপারটা এতটাই মানসিক, কে কতটা শোকার্ত দেখে বোঝা মুশকিল। অবশ্যই শোক অনেকটাই নির্ভর করে দূরত্বের উপর। প্রয়াত ব্যক্তিদের বাড়ির লোকেরা যতটা শোকাহত হন ওই শহরের সব মানুষ কি একইরকমভাবে শোকাহত হন? দূরত্ব বাড়তে থাকলে শোকও আনুপাতিকভাবে কমতে থাকে।’
সমালোচকদের এভাবে শুধু জবাব দেওয়া নয়, নিজের যুক্তিও তুলে ধরেছেন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। তিনি ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্টও করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘দুর্ঘটনাগ্রস্তদের বাড়িতে হয়ত দু’দিন ধরে রান্না হয়নি, আর আমাদের বাড়িতে? অনেকেই হয়ত কাল শনিবার বলে আজ একটু ভাল মন্দ খেয়েছি। বাড়িতে টিভি বন্ধ করিনি, মোবাইলে ফেসবুক ঠিক চলেছে। এই দু’দিনে বিজয়াটাও সেরে নিয়েছি, লক্ষ্মী পুজো অবশ্যই করতে হবে… না হলে ঘোর অমঙ্গল হবে। শুধু কার্নিভালটা বন্ধ রাখলে জমিয়ে শোক পালন হতো।’ অর্থাৎ তিনি কার্নিভালের পক্ষে এবং তার জন্য উপযুক্ত যুক্তি দেখিয়েছেন তিনি। বিরোধীরা এই যুক্তি মেনে নিতে না পারলেও মাল নদীতে বিপর্যয়ের ঘটনা গোটা রাজ্যে প্রভাব ফেলেনি।
ঠিক কী বলছে বিজেপি? রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহর এই ফেসবুক পোস্ট মেনে নিতে পারেননি বিজেপি নেতা। তাই কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে উত্তরবঙ্গের বিজেপির অন্যতম প্রধান মুখ শংকর ঘোষ এই বিষয়ে বলেন, ‘যার যেমন রুচি, তেমন পোস্ট তিনি করেছেন। খেলা, মেলা, মোচ্ছবে মানুষকে ভুলিয়ে রাখতে চাওয়া এবং তার স্বপক্ষে যুক্তি সাজাতেই এসব বলছেন উদয়ন গুহ।’