দুর্নীতি নিয়ে দলীয় সতর্ক করতে করছিলেন ক্যানিংয় পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা। তা করতে গিয়ে কার্যত স্বীকার করে নিলেন, কাজ করে দেওয়া জন্য টাকা নেন দলের নেতারা।
মাস কয়েক আগেই তিনি ভাঙড় বিধানসভার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন। শুক্রবার ভাঙড়ের ফুলবাড়ি এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন শওকত। সেই সময় তিনি বলেন, 'আইএসএফকে দোষ দেবো না,আমাদের নেতাদের দোষ আছে। আমাদের কিছু ভিখারি নেতা আছে। এদের কাজ কি? হাত পেতে টাকা নেওয়া। ঘরের জন্য দাও পাঁচ হাজার- দশ হাজার। বিচারের জন্য দাও পাঁচ হাজার-দশ হাজার। রাস্তার জন্য দাও পাঁচ হাজার দশ হাজার।' এ প্রসঙ্গে তিনি নিজের বিধানসভার উদাহরণ দিয়ে বলেন,'আমি আমার বিধানসভায় চালু করেছি, কোনও নেতা যদি গরিব মানুষের থেকে পাঁচ টাকা নেয়, তবে তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দল থেকে বের করে দেওয়া হবে।'
শকতের এই বক্তব্যকে সমর্থন জানান দলের আরও এক নেতা কাইজার আহমেদ। তিনি বলেন,'এটা আমাদের দাবি, আমরা যারা স্বচ্ছ রাজনীতি করি এটা তাঁদের সকলের দাবি। '
গত বিধানসভা নিবার্চন ভাঙড় আইএসএফের হাতে চলে যাওয়ার ওই এলাকায় সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে সতর্ক হয় তৃণমূল। দলের অন্তর্দ্বন্দ্বের পাশাপাশি নীচুতলার নেতাদের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া নিয়েও অভিযোগ আসে। এই পরিস্থিতিতে ভাঙড়ের নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। দায়িত্ব দেওয়া হয় ক্যানিং পূর্বে বিধায়ক শওকত মোল্লাকে। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি দলীয় নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে সতর্ক করেন। দলের দুই পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী নেতা আরাবুল ইসলাম ও কাইজার ইসলামকে নিয়ে বৈঠকও করেন।
তবে বিরোধীরা শওকতের এই মন্তব্যকে কটাক্ষ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, যাঁরা আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ডুবে আছে তাঁরা স্বচ্ছতার কথা বলেন কী করে। এই প্রসঙ্গে স্থানীয় এক আইএসএফ নেতা মনে করিয়ে দেন, মাস খানেক আগেই হুগলির ফুরফুরা শরিফে পিরজ্বাদা ত্বহা সিদ্দিকির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত। তাঁকে দেখে 'চোর চোর' স্লোগান দেন স্থায়ীয় কিছু মানুষ। তিনি বলেন, 'যেখানে জনগণ ওঁকে এ সব বলছেন সেখানে ওর মুখে কী স্বচ্ছতার কথা মানায়।'