বাংলা জুড়ে এখন ভারী বৃষ্টিতে বানভাসী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর তার জেরে প্রত্যেক জেলায় জলযন্ত্রণায় ভুগছে সাধারণ মানুষ। কোথাও বাঁধ ভেঙে গ্রাম জলমগ্ন হয়েছে। আবার কোথাও জাতীয় সড়কে নেমেছে ধস। আবার কয়েকটি নদীতে জল বইছে বিপদসীমার উপর দিয়ে। সবমিলিয়ে দুর্গাপুজোর মুখে বাংলার জেলায় দুর্যোগের মেঘ দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, দার্জিংলিং, কালিম্পং–সহ নানা জেলায় নাগাড়ে বৃষ্টি চলছে।
এই পরিস্থিতিতে আজ, রবিবার জলমগ্ন হয়ে পড়েছে উত্তরবঙ্গের নানা এলাকা। টানা বৃষ্টির জেরে দার্জিলিংয়ের শ্বেতিঝোরার রাস্তার বড় ধস নেমেছে। তাই বন্ধ করে দিতে হয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। শিলিগুড়ি থেকে সিকিম–কালিম্পং পৌঁছতে ট্রেনগুলিকে ঘুরপথে যেতে হচ্ছে। বানভাসী পরিস্থিতিতে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। কারণ আর যদি বৃষ্টি বাড়ে তাহলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে। জলস্তর ইতিমধ্যেই বাড়ছে ডুয়ার্সের নদীগুলিতে। আত্রেয়ী নদীতে জল বৃদ্ধি পাওয়ায় জলমগ্ন বালুরঘাট। সকাল থেকে নাগাড়ে বৃষ্টি লেগেই রয়েছে উত্তরবঙ্গে। পাহাড় ও সমতলে লাগাতার বৃষ্টি চলছে। তাই জলপাইগুড়ির তিস্তা নদীর দোমোহনি থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত হলুদ সতর্কতা জারি করেছে সেচ দফতর।
এদিকে দার্জিলিংয়ের শ্বেতিঝোরার রাস্তার বড় অংশ ভেঙে গিয়েছে। আজ, রবিবার তা দেখে রীতিমত চমকে উঠছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই ঘটনার জেরে সেখানে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ঘুরপথে যেতে হচ্ছে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায়। এমনকী শ্বেতিঝোরার রাস্তা ভেঙে আজ তিস্তা নদীতে পড়ে গেল একটি গাড়ি। তিস্তা নদীতে নেমে উদ্ধারকারী দল দু’জনের একজনকে উদ্ধার করেছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। দুদিন ধরে সিকিম পাহাড়ে এবং সমতলেও নাগাড়ে বৃষ্টি চলছে। যার জেরে ফুলে উঠেছে তিস্তা নদী। তিস্তার গজলডোবা ব্যারেজ থেকে ১ হাজার ৭৫৯ দশমিক ৯৮ কিউসেক জল ছাড়ায় জলস্তর আরও বেড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাকে ৫৭২ কোটি টাকা দিচ্ছে মোদী সরকার, নয়াদিল্লিতে আন্দোলনের মুখে উদারতা
অন্যদিকে দক্ষিণ দিনাজপুরের একাধিক রাস্তা খারাপ হয়ে পড়েছে। মালদায় সারারাত বৃষ্টি হয়েছে। কোথাও এখন হাঁটু সমান জল, আবার কোথাও কোমর সমান জল নিয়ে কাটাতে হচ্ছে জীবন। নেতাজি মার্কেটে, চিত্তরঞ্জন মার্কেট সম্পূর্ণ জলের তলায় চলে গিয়েছে। মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালও জলমগ্ন। ধূপগুড়িতে নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েই চলেছে। রাতভর বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে জলপাইগুড়ি শহরের একাধিক এলাকা। ভয়াবহ ধস নেমেছে মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জে। ডাকবাংলা থেকে পাকুর যাওয়ার একমাত্র রাস্তা ১০৬ নম্বর জাতীয় সড়কে ধসে নেমেছে বলে বিঘ্নিত যান চলাচল।