প্রায় ৫ মাস কর্মহীন হয়ে থাকার পর ফের নিজেদের কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করছেন পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকরা। আনলকের তৃতীয় পর্বে দেশজুড়ে খুলেছে বহু কারখানা। ধীরে ধীরে সচল হচ্ছে অর্থনীতি। কিন্তু ট্রেন বন্ধ থাকায় কাজে ফিরতে পারছেন না শ্রমিকরা। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের আনতে বাস পাঠাচ্ছেন ভিনরাজ্যের মালিকরা। যেমন বুধবার মালিকের পাঠানো বাসে তামিলনাড়ুর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলেন কোচবিহারের মাথাভাঙা ২ নম্বর ব্লকের বহু শ্রমিক।
ভিনরাজ্যমুখি শ্রমিকরা জনিয়েছেন, মার্চে লকডাউন শুরু হতে বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছিলাম। অতি কষ্টে প্রায় ২,০০০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে তামিলনাড়ু থেকে পৌঁছেছিলাম কোচবিহারে। কিন্ত এখানে প্রায় ৫ মাস কর্মহীন অবস্থায় বসে রয়েছি। কোনও উপার্জন নেই। ফলে ক্রমশ দেনা বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে কর্মস্থলে ফেরা ছাড়া উপায় নেই।
ভিনরাজ্যমুখি শ্রমিক বিশ্বজিৎ মণ্ডল জানান, আমরা এখানে যেমন সমস্যায় রয়েছি। তেমন সমস্যায় রয়েছেন আমাদের কারখানার মালিকও। শ্রমিক না থাকায় তিনি কারখানায় উৎপাদন শুরু করতে পারছেন না। এমনিতেই লকডাউনের জেরে তাঁর প্রচুর লোকসান হয়ে গিয়েছে। তার ওপর নতুন লোক নিয়ে তাঁকে প্রশিক্ষণ দিয়ে উৎপাদন শুরু করতে গেলে আরও দেরি হয়ে যাবে। ট্রেন কবে চলবে ঠিক নেই, তাই আমাদের নিতে বাস পাঠিয়েছেন তিনি।
বুধবার রাতে মাথাভাঙা ২ নম্বর ব্লকের ফুলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম নিমতলা এলাকার এমনই প্রায় ৯০ জন শ্রমিক তামিলনাড়ুর পথ ধরেন। তাঁদের বাসে তুলে দিতে সেখানে ভিড় জমান পরিজনরা।
শুধু কোচবিহারেই নয়, গত কয়েকদিনে উত্তরবঙ্গের একাধিক জায়গা থেকে শ্রমিকদের নিতে ভিনরাজ্যের কারখানার মালিকরা বাস পাঠিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। কাজে অনভ্যাসের অবসর কাটিয়ে কাজে ফিরতে পেরে খুশি শ্রমিকরাও।
বলে রাখি বুধবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, লকডাউনের জেরে আনুমানিক ১০ লক্ষ প্রবাসী শ্রমিক পশ্চিমবঙ্গে ফিরে এসেছেন। এদের মধ্যে ৫.৭০ লক্ষ শ্রমিককে ১০০ দিনের কাজে নিয়োগ করেছে প্রশাসন।