সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি, দক্ষিণের জেলাগুলিতে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার মতো ঐতিহ্যগতভাবে শুষ্ক অঞ্চলগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বাংলার বর্ষার ধরণে ব্যাপক পরিবর্তন হচ্ছে। এই পরিবর্তন অঞ্চলগুলির কৃষির উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। যা আগামী দিনে রাজ্যের অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলবে বলে সম্প্রতি এক সমীক্ষার রিপোর্ট জানাচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং এল নিনোর প্রভাবে গত চার দশক ধরে বৃষ্টিপাতের বণ্টনে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।
বুধবার দিল্লির শীর্ষস্থানীয় নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্সিল অফ এনার্জি, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়াটার (সিইইডব্লিউ) বুধবার 'ডিকোডিং ইন্ডিয়া'স চেঞ্জিং মনসুন প্যাটার্ন এ তহসিল (সাব-ডিভিশন) লেভেল অ্যাসেসমেন্ট’ শীর্ষক রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে।
পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর পাট্টা প্রকল্পের বিরোধিতায় উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিক ও আধিবাসী সংগঠন
এই সমীক্ষায় বেশ কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে যা এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। যেমন বর্ষার দেরিতে আগমন এবং ফিরে যাওয়া। আর্দ্র দিনের সময়কালের মধ্যে দীর্ঘায়িত শুষ্ক সময়, ভারী বৃষ্টিপাতের বৃদ্ধি, যার ফলে বন্যা। শুকনো ভূগর্ভস্থ শিলাগুলিকে শিক্ত করার জন্য পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাব। ফলে বৃষ্টি হলেও মাটির নীচে সেভাবে জল জমছে না। এর ফলে এক সময় চাষবাষ করা যেখানে সহজ ছিল সেখানে ভূগর্ভস্থ জলের অভাবে চাযবাস ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে।
পড়ুন। ইঁদুরের শরীরে মারণ ভাইরাস, Sars-CoV-2 এর মতো! চিনের গবেষণাকে ‘পাগলামো’ বলছে বিশ্ব
এই রির্পোটের অন্যতম লেখক এবং সিইইডব্লিউ-এর জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা দলের প্রধান বিশ্বাস চিতালে বলেন, ‘গত চার দশক ধরে এই সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, উত্তরবঙ্গে জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পেয়েছে এবং দক্ষিণে তা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্যাটার্নটি গুরুতর জল অপ্রতুলতার সমস্যা তৈরি করেছে, যা কৃষি ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করেছে। অক্টোবর পর্যন্ত বর্ষার সম্প্রসারণও একটি ধারাবাহিক প্রবণতা হিসাবে লক্ষ্য করা গিয়েছে।
যেহেতু ভারত একবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বৃষ্টিপাতের ১০ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে, তাই দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যত রক্ষার জন্য নতুন পরিকল্পনা এবং সুস্থায়ী অনুশীলনের প্রয়োজনীয়তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।