সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করার কথা বলেছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তার মধ্যে আপাতত দু’জন উপাচার্যকে রাজ্যপাল অস্থায়ীভাবে নিয়োগ করেছেন। এই রাস্তায় হাঁটতে নিষেধ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তাই এখন যা পরিস্থিতি তাতে সর্বোচ্চ আদালত চাইলে তাঁদের স্থায়ীভাবে নিয়োগ করে দিতে পারে। এটা যদি ঘটে তাহলে দুটি বিষয় একসঙ্গে ঘটবে। এক, রাজ্যপালের এক্তিয়ার খর্ব হবে। দুই, বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলি স্থায়ী উপাচার্য পাবে।
এদিকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সেই অস্থায়ী উপাচার্যই নিয়োগ করে চলেছেন। আর তাতে বিরক্ত সুপ্রিম কোর্ট। তাই এবার সুপ্রিম কোর্ট সরাসরি স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারের অধীনস্থ ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়েই স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা দরকার। তার জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিষয়টির সমাধান করা প্রয়োজন। উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটির পরিবর্তে রাজ্যের নামের তালিকা থেকেই নিয়োগ করা সম্ভব কি না সেটা রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোসকে খতিয়ে দেখতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: কলকাতা বিমানবন্দর এলাকার থানাগুলিতে জারি ১৪৪ ধারা, এমন সিদ্ধান্তের নেপথ্য কারণ কী?
অন্যদিকে এর আগেও স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে কফি খেতে খেতে সমস্যার সমাধান করতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু তারপরও দেখা যায় একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন আচার্য আনন্দ বোস। এই নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতের আবহ তৈরি হয় রাজভবনের। এবার সর্বোচ্চ আদালতের অবস্থানের পরে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তারা বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে আগ্রহী। এমনকী রাজ্যকে আরও নাম সুপারিশ করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু প্রশ্ন হল, আচার্য কি বিষয়টি মেটাতে চান?’
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্য স্পষ্ট করে দিয়েছে, এই সমস্যা রাজ্যপাল তথা আচার্যের জন্যই মিটছে না। ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোসকে ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদে এক সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগ করতে বলেছিল। এদিন মামলার শুনানির কথা থাকলেও আচার্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরামনি সাংবিধানিক বেঞ্চের মামলায় ব্যস্ত থাকবেন বলে বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চকে জানান, রাজ্যের পাঠানো তালিকা থেকে দু’জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। পাল্টা রাজ্যের পক্ষে অভিষেক মনু সিংভি জানান, যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁরা অস্থায়ী উপাচার্য। সুতরাং রাজ্যপাল যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানেনি সেটা তুলে ধরা হয়েছে।