ফেসবুকে এক মহিলার একটি লাইভ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে তিনি বাঁচার জন্য কাতর আর্জি জানিয়েছেন। মহিলার অভিযোগ, তাঁর স্বামী, শাশুড়ি এবং ছেলে মিলে তাঁকে মারধর করছে। বিয়ের পর থেকেই তাঁর ওপর অত্যাচার চলছে বলে অভিযোগ। সেই ফেসবুক লাইভ মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই মহিলার নাম সমাগতা ভট্টাচার্য। তিনি হুগলির কোন্নগরের নবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। ফেসবুক লাইভে এসে ওই মহিলা বাঁচানোর জন্য কাতর আর্জি জানান। তাঁর ফেসবুক লাইভের শোরগোল পড়ে যায়। নেটিজেনদের অনেকেই সেই ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন।
আরও পড়ুন: মহিলাদের মারধর করা যেতেই পারে, মত ৩৩% পুরুষের, জার্মান সমীক্ষায় মিলল ভয়াবহ তথ্য
ফেসবুক লাইভে কাতর আর্জি করে ওই মহিলা জানান, তাঁর স্বামী এবং ছেলে মিলে তাঁকে মারধর করছেন। তিনি এখন বাপের বাড়ি ফিরে যেতে চান। এমনকী তাঁর স্বামীর এক বন্ধুও তার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছেন বলে তিনি ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন। আরও একটি পোষ্টের তিনি লিখেছেন, ‘একটা ট্রমার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি রিকভার করার চেষ্টা করছি। বাধ্য হয়েছি। শাশুড়ি একজন মা হয়ে যে ক্ষতি করেছেন। আমি একজন মা হয়ে নিজের সন্তানের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি মাত্র। ও ভবিষ্যৎ এ কারও প্ররোচনায় এ ভুল আর যেন না করে।’ তিনি বলেন, ‘এত বছর ধরে আমি অত্যাচার সহ্য করেছি। এখন আর সহ্য করতে পারছি না। কেউ এসে আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও।’
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সমাগতার বিয়ে হয়েছিল ২০০৬ সালের ৯ অগস্ট। হাওড়ার বাসিন্দা অরিজিৎ ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের ১৫ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। তার নাম সপ্তর্ষি ভট্টাচার্য। স্বামী রাইটার্সে কাজ করেন। মহিলার অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁর উপর অত্যাচার হচ্ছে। এত বছরের অত্যাচার আর তিনি সইতে পারছেন না। সমাগতার অভিযোগ, শনিবার স্বামীর কাছ থেকে ফোনে রিচার্জের জন্য ১০০ টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু টাকা চাওয়ার জন্য তাঁর স্বামী তাঁকে মারধর করেন। আরও অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁকে মানসিক রোগী সাজিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে কড়া ওষুধ খাইয়ে পাগল করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁর স্বামী।
তাঁর আরও অভিযোগ স্বামীর সঙ্গে তাঁর দিদির সম্পর্কের কথা জানতে পারেন তিনি। দিদির মদতেই তাঁর স্বামী তাঁর উপর অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। এর জন্য তিনি বারংবার বাবা মাকে জানিয়েছেন। কিন্তু সব জায়গা থেকে তাঁকে মানসিক রোগী বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। শনিবার অত্যাচারের মাত্রা বেশি হওয়ায় তিনি নিজেকে বাঁচাতে স্বামীকে কামড় দিয়ে ভয়ে নিজেকে ঘরে বন্দি করে ফেসবুক লাইভ করেন। তা দেখার পরে তাঁর ফেসবুক বন্ধু সোমা দাস তাঁদের বাড়ি ছুটে যান। পরে সোমাকে তাঁর বাপের বাড়িতে পৌঁছে দেন। এরপর বাড়িতে পৌঁছে আরও একটি ফেসবুক লাইভ করেন সমাগতা। তাতে তিনি নিজেকে সুরক্ষিত বলে দাবি করেন। অন্যদিকে, এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিজিৎ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, সমাগতার মানসিক রোগ বিয়ের আগে থেকেই ছিল। বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন তাঁর স্ত্রীর মানসিক রোগ রয়েছে। ২০১২ সাল থেকে চিকিৎসা শুরু হয় তাঁর স্ত্রীর। এদিনের ঘটনায় তিনি নিজেও ভেঙে পড়েছেন।