মোবাইলের টাওয়ারে কর্মীর দেহ! অবিশ্বাস্য লাগলেও এটাই বাস্তব। আর এই টাওয়ার থেকে উদ্ধার হল দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা কর্মীর দেহ। মৃতের নাম ইসলাম আনসারি (২৬)। বাড়ি পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর থানার গোপীনাথপুর গ্রামে। যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত। তাঁর দেহ একটি মোবাইল টাওয়ারে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান এলাকার মানুষজন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, আগেই মৃত্যু হয়েছে। এসডিপিও (রঘুনাথপুর) দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ইসলাম আনসারি নামের ওই কর্মীর দেহ উদ্ধারের পরে রঘুনাথপুর থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
পরিবার সূত্রে খবর, ইসলাম বেসরকারি সংস্থার অধীনে ওই মোবাইল টাওয়ার দেখাশোনার কাজ করতেন। গত আট মাস বেতন পাননি ইসলাম। তারই জেরেই মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। শুধু ইসলাম নন, মোবাইল টাওয়ারে কাজ করা কর্মীদের সংগঠনের পুরুলিয়ার সম্পাদক সনৎ মাহাতোর অভিযোগ, ওই বেসরকারি সংস্থার অধীনে পুরুলিয়ার বিভিন্ন মোবাইল টাওয়ারে কাজ করা মোট ২২ জন গত আট মাস বেতন পাননি।
ইসলামের টাকার প্রয়োজন ছিল বলে জানাচ্ছেন রঘুনাথপুর এলাকার যুব তৃণূলের নেতা সাদ্দাম আনসারি। তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার ইসলাম ফোন করে ৫,০০০ টাকা চেয়েছিলেন। বুধবার সকালে দেব বলেছিলাম। টাকা না পেলে আত্মহত্যা করতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিল ইসলাম।’ তৃণমূলের স্থানীয় নেতা হাজারি বাউড়ি বলেন, ‘ইসলাম আমাদের দলের অত্যন্ত সক্রিয় কর্মী ছিলেন। গত আট মাস বেতন বকেয়া থাকায় চরম আর্থিক সংকটে পড়েছিলেন।’
ওই বেসরকারি সংস্থার প্রতিক্রিয়া পাওয়া সম্ভব হয়নি। এক আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনাটি শুনে পরে বক্তব্য জানাবেন বলে ফোনের লাইন কেটে দেন। তারপরে বহুবার ফোন করা হলেও ধরেননি। জবাব মেলেনি মেসেজেরও। এখন ইসলামের বাড়ি ঘিরে পড়শিদের ভিড়। মৃতের বাবা উমের আলি আনসারি কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না।