নেতাজি জয়ন্তীতে ডিএ আন্দোলনকারীদের তাঁবুতে গিয়ে 'বাংলায় আগুন জ্বালানোর' হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি অমিত শাহের 'ডিএ বার্তা' নিয়েও মুখ খুলেছিলেন তিনি। এই আবহে শুভেন্দুকে পালটা তোপ দাগলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এই নিয়ে তৃণমূল নেতা বলেন, 'শুভেন্দু অধিকারী ডিএ আন্দোলনকারীদের মঞ্চে গিয়ে বলেছেন যে বাংলায় আগুন জ্বলবে। আমাদের আশঙ্কা, বাংলাকে অশান্ত করতে কোনও গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।' (আরও পড়ুন: ১৯ দিন পর আবারও শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডি, এবার সঙ্গে ১০০ CRPF)
আরও পড়ুন: দিল্লিতে বৈঠক কেন্দ্র-রাজ্য স্তরের সচিবদের, বাংলার বকেয়া জট কি এবার কাটবে?
কুণালের কথায়, 'শুভেন্দু আগেও একাধিকবার বাংলার শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার অপচেষ্টা করেছেন। আসানসোলে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিলেন। এবং তাতে তিনজনের প্রাণহানি হয়েছিল। আবার সম্প্রতি আমজনতাকে প্ররোচিত করতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত ভুয়ো তথ্য পেশ করেছিলেন শুভেন্দু। তিনি এমনটা বারবারই করে আসছেন। পুরনো ভিডিয়ো সামনে এনে রাজ্যে অশান্তি করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পারেনি। এখন নতুন করে চক্রান্তের চেষ্টা করা হচ্ছে।' এদিকে কুণাল ডিএ আন্দোলনকারীদের তোপ দেগে বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সীমিত সাধ্যের মধ্যেই তাঁদের দাবি পূরণের প্রয়াস করেছেন। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার যে বাংলার হকের বিপুল টাকা আটকে রেখেছে, তা নিয়ে কিন্তু এই আন্দোলনকারীরা কিছুই বলছেন না।'
এর আগে গতকাল শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, 'অমিত শাহ আমাকে বলে গিয়েছেন, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ ডাকলে যাতে আমি আসি। আমরা ডিএ আন্দোলনকারীদের পাশে আছি। এবার আশা করি সুপ্রিম কোর্ট বিবেচনা করবে। সাহস থাকলে এদের বরখাস্ত করে দেখাক মুখ্যমন্ত্রী।' শুভেন্দু বলেন, 'সরকারি কর্মীরা সচেতন। সংবেদনশীল। কিন্তু ২০১৬ সালের পর তাঁরা এই সরকারের স্বরূপ বুঝেছেন। বুঝেছেন যে তাঁদের বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। কর্মীরা দেখেছেন আবাস যোজনা থেকে শৌচালয়। কেন্দ্রের একাধিক প্রকল্পের টাকা লুঠ হয়েছে। এই সরকারি কর্মচারীরা দেখেছেন স্থায়ী ৬ লক্ষ পোস্ট অবলুপ্ত করছে সরকার। অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করছেন চার হাজার থেকে বারো হাজার।' শুভেন্দু এদিন আরও দাবি করেন, 'পিএসসি-র কর্মচারীরা আমায় তথ্য দেন। এমনকী বামপন্থী কর্মচারীরা আমায় জানিয়েছেন... পিএসসি অফিসকেও বাদ দেওয়া হয়নি। মিড ডে মিলের টাকায় কম্বল বিতরণ হয়েছে।' শুভেন্দু বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী আতঙ্কিত। এই সকল সরকারি কর্মচারীদের তিনি তাঁর পক্ষে পাবেন না আগেই বুঝে গিয়েছেন। তাই এদের ডিএ আটকে আছে।'
এছাড়াও বিরোধী দলনেতা বলেন, 'এদের তিনি পোস্টাল ব্যালটে পাবেন না। তাই এদের ওপর দমন পীড়ন নীতি নেওয়া হয়েছে। এই অনশনকারীদের কিছু হলে বাংলায় আগুন জ্বলবে। ভাস্করবাবুকে বলব, নবান্ন অভিযান করুন। আমরা পাশে আছি। এরা প্রাণ আত্মাহুতি দিতে চায়। চাকরি যাওয়ার ভয় এরা করে না।' এদিকে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, ডিএ আন্দোলনকারীদের দাবি আংশিক সফল। তাঁর কথায়, 'সরকার ঠেলায় পড়ে ৩ থেকে বাড়িয়ে বর্ধিত ডিএ-র হার ৪ শতাংশ করেছে।' এই আবহে সরকারকে আরও চাপে ফেলতে শুভেন্দুর নিদান, জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাকি সর্বাত্মক ধর্মঘট করুন। উল্লেখ্য, ডিএ-র দাবি না মেটানো হলে আগামী ২৯ জানুয়ারি থেকে লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।