পুজোর আনন্দে মানুষ ভুলবে স্বাস্থ্যবিধি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাও সম্ভব হবে না। আর তা ভাবাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসক মহলকে। তাঁদের আশঙ্কা, দুর্গাপুজোর পর লাগামছাড়া হতে পারে করোনা সংক্রমণ। এটা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত রাজ্য সরকারও। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তা আরও স্পষ্ট হল। দুর্গাপুজো থেকেই করোনা মোকাবিলায় আরও শক্ত হাতে নামছে রাজ্য। বিভিন্ন হাসপাতালে বাড়ানো হচ্ছে কোভিড শয্যা। একইসঙ্গে রাজ্যের বিভিন্ন কোভিড হাসপাতালে নিয়োগ করা হচ্ছে প্রায় আড়াই হাজার নার্স।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পুজোর আগে কোভিড পরিষেবার উন্নতিতে এবং সর্বত্র রোগীদের জন্য বিনামূল্যে বেডের সংখ্যা বাড়াতে রাজ্য সরকার কিছু সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে। এএসআই বালিটিকুরিতে নতুন ৪৮টি শয্যা রবিবার থেকে চালু হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সোমবার থেকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে ৫৬টি নতুন বেড চালু হবে। আরও নতুন ৪৯৬টি বেড চালু হবে আগামী ২–৩ সপ্তাহের মধ্যেই। পুজোর আগেই রাজ্য জুড়ে এভাবে প্রায় ৬০০টি বিনামূল্যে সরকারি বেডের সংখ্যা বাড়ছে। এগুলি সবই আইসিইউ এইউডিজি বেড। এমন বেড রাজ্যে এই মুহূর্তে রয়েছে ১২৪৭টি। এমন আরও ৬০০টি অর্থাৎ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড বাড়ানো হচ্ছে।’
একইসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্র আরও শক্তিশালী করার স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোভিড হাসপাতালগুলিতে আরও নার্স নিযুক্ত করার নির্দেশ দেন। এদিন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সংশ্লিষ্ট সেই ফাইলে মুখ্যমন্ত্রীর স্বাক্ষর করাও হয়ে গিয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন কোভিড হাসপাতালে মোট ২৪৭৫ জন নার্স নিযুক্ত হচ্ছেন।’
এদিকে, বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পাড়ার চিকিৎসকদের জন্য স্বাস্থ্য দফতরের কিছু নিয়মনীতি শিথিল করল রাজ্য। যে সমস্ত চিকিৎসক একা চেম্বার চালান বা পাড়ায় পাড়ায় স্বতন্ত্রভাবে যে সব ডাক্তার রোগী দেখেন তাঁদের বিপুল অবদান রয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে। এদিন এ কথা তুলে ধরেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। তিনি বলেন, ‘তাঁদের কথা ভেবে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ক্লিনিক্যাল এসট্যাব্লিশমেন্ট অ্যাক্টের খুঁটিনাটি নিয়ন্ত্রণ থেকে তাঁদের মুক্ত করা হবে। এর ফলে এই চিকিৎসকরা সহজ, সচ্ছন্দভাবে নির্ভয়ে রোগীদের আরও ভালভাবে পরিষেবা দিতে পারবেন।’