কলকাতার দমদম নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেখা গেল বিরল বিমান ‘বলুগা’ বা সাদা তিমিকে। বিমান নির্মাতা সংস্থা এয়ারবাসের তৈরি এই বিশেষ বিমানটিতে করে বিমানের দেহাংশ পরিবহণ করা হয়। কখনো এয়ারবাসের তৈরি হেলিকপ্টার গ্রাহকের কাছে পৌঁছতে ব্যবহার করা হয় এই বিশেষ বিমান। তেমনই ২টি বিমান থাইল্যান্ডের পাটায়ায় পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল এই বিমান। পথে বিশ্রাম নিতে কলকাতায় অবতরণ করে বিমানটি। ২৩ বছর পর কলকাতায় অবতরণ করল এই বিমান।
ইউরোপীয় সংস্থা এয়ারবাসের বিমানের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরি হয় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। সমস্ত যন্ত্রাংশ জুড়ে বিমানের রূপ দেওয়া হয় ফ্রান্সের টুলুসে। এয়ারবাসের বিমানের ফিউসালজ বা মূল দেহ (যেখানে যাত্রীরা বসেন ও পণ্য বোঝাই করা হয়) সেটি তৈরি হয় জার্মানির হামবুর্গে। সেখান থেকে ফিউসালজগুলি টুলুসে উড়িয়ে আনতে ৫টি বিশালআকৃতি পণ্যবাহী বিমান তৈরি করেছে এয়ারবাস। শনিবার কলকাতায় অবতরণ করে বলুগা টু বিমানটি।
ছ’তলা বাড়ি সমান উঁচু বিমানটিকে নিয়ে বিমানবন্দরের ও বিমানসংস্থার কর্মীদের মধ্যে উৎসাহের অন্ত ছিল না। এই বিমানের দৈর্ঘ্য ১৮৪ ফুট। উচ্চতা প্রায় ৫৭ ফুট। ডানার মোট দৈর্ঘ্য ১৪৭ ফুট। সর্বোচ্চ ৪৭,০০০ কিলোগ্রাম পণ্যবহন করতে পারে বিমানটি। বিমানটিতে মোট ২৩,৮৬০ লিটার জ্বালানি ধরে। এরবার সম্পূর্ণ জ্বালানি ভরে ৪০ টন ওজন নিয়ে ২,৭৭৯ কিলোমিটার উড়তে পারে বিমানটি।
শনিবার রাত ৮.৫২ মিনিটে কলকাতায় অবতরণ করে এয়ারবাস বলুগা ২। তার পর ২৪ ঘণ্টা এয়ারপোর্টের ১৬ নম্বর পার্কিং বেতে বিশ্রামে ছিল বিমানটি। তখনই অদ্ভূতদর্শন বিমানটিকে দেখতে এয়ারপোর্টের অ্যাপ্রন এরিয়ায় ভিড় জমে যায়। সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার না থাকলেও বিমানবন্দরের আধিকারিক ও কর্মীরা এই বিমানের সঙ্গে সেলফি তোলার বিরল সুযোগ হাতছাড়া করেননি।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, টুলুস থেকে ২টি হেলিকপ্টার নিয়ে মার্সেলস, এথেন্স, কায়েরো, আবুধাবি, আমদাবাদ হয়ে বিমানটি পৌঁছেছে কলকাতায়।
ও হ্যাঁ, উত্তর সাগরের সাদা তিমি বলুগার মতো দেখতে বলে এমন নামকরণ হয়েছে এই বিমানের। শেষ বার ১৯৯৯ সালে কলকাতায় নেমেছিল এই বিমান।