ছোটো বোনকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল দাদার বিরুদ্ধে। আনন্দপুর থানায় গিয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ জানিয়েছিলেন বছর ছাব্বিশের নির্যাতিতা তরুণী। তবে মামলা প্রত্যাহার করতে চেয়ে আদালতে চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার বোনের করা সেই আবেদন নাকচ করে দিয়েছে আদালত। ধৃতের জামিনের আবেদন খারিজ করার পাশাপাশি আরও একদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। একইসঙ্গে পুনরায় নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দির দিন স্থির করেছে আলিপুর আদালত। পুলিশকে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
আনন্দপুর থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘তরুণীর গোপন জবানবন্দি নেওয়ার সঙ্গে তাঁর আত্মীয় এবং এক বন্ধুর বক্তব্য রেকর্ড করা হবে।’ এদিন ধৃতকে ফের আদালতে তোলা হলে তার জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন অভিযুক্তের আইনজীবী। কারণ হিসেবে আইনজীবীর দাবি, যে নির্যাতিতাই এই মামলা আর এগোতে চাইছেন না। তবে এর বিরোধিতায় সরকারি আইনজীবী মামলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেছেন আদালতে। তিনি মন্তব্য করেন, ওই নির্যাতিতার মামলা থেকে পিছিয়ে আসার কারণ তাঁকে অন্য ধরনের চাপও দেওয়া হতে পারে। দু’পক্ষের বক্তব্য খতিয়ে দেখে অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক। তিনি জানান, অভিযোগকারিণীর দেওয়া চিঠি তিনি এখনই গ্রহণ করবেন না। তার আগে ওই তরুণীর পুনরায় গোপন জবানবন্দি দেওয়ার পরই এই ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পুলিশকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দেন বিচারক।
এক বেসরকারি বিমা সংস্থার কর্মী ওই তরুণী গত সোমবার রাতে আনন্দপুর থানায় গিয়ে দাদার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে একাধিকবার দাদা তাঁকে ধর্ষণ করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে তাঁর মা-বাবার মৃত্যু হয়েছিল। অভিযুক্ত ৩০ বছর বয়সী ওই যুবক পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। চেন্নাইয়ের একটি সংস্থায় কর্মরত হলেও অতিমারীতে কলকাতায় ফিসে আসে। সেখানে বোনের সঙ্গেই থাকছিল অভিযুক্ত। ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোমে’ কাজ করছিল সে। তখনই এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ। ওই নির্যাতিতা এই ঘটনার বিষয়ে কয়েকজন দূর সম্পর্কের আত্মীয়দের জানালেও কেউ প্রথমে ওই তরুণীর কথা বিশ্বাস করেননি। তারপরই আনন্দপুর থানার দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা।
তবে বোন থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পারে সেটা টের পেয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত দাদা। ওই তরুণীর অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। অভিযুক্তের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে এরপর টিটাগড় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় পুলিশকে ওই যুবক জানায়, বোন যে ধরনের জীবনযাপন করছিল, তাতে আপত্তি জানিয়েছিল সে। সে কারণেই বোন তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। এই ঘটনার পরেই আদালতে চিঠি দিয়ে ধর্ষণের মামলা প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন নির্যাতিতা ওই তরুণী।