বিশ্বভারতীর সঙ্গে অমর্ত্য সেনের পরিবারের জমি বিবাদে রাজনৈতিক রং লেগেছিল আগেই। এবার তাতে ঝাঁপ দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, অমর্ত্য সেনকে সম্মান করে বিজেপি। কিন্তু তিনি যেন কোনও নির্দিষ্ট মতাদর্শের মুখপাত্র হয়ে না ওঠেন।
শান্তিনিকেতনে অমর্ত্য সেনের বাড়ির একাংশের জমি বিশ্বভারতীর প্রাপ্য বলে সম্প্রতি দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর এমন দাবিতে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার অধ্যাপক সেনকে চিঠি দিয়ে তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পালটা চিঠিতে বিশ্বভারতীর দাবির পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ থেকে থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন অমর্ত্য সেন।
শনিবার এই বিবাদ নিয়ে মুখ খোলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘আমরা ওনার কাছ থেকে কিছু আশা করি না। আমরা ওনাকে সম্মান করি। সারা ভারত তাঁর জন্য গর্ব করে। তাই যেন একটি গোষ্ঠীর মুখপাত্র হয়ে না থাকেন’।
দিলীপবাবুর প্রশ্ন, ‘যদি উনি কোনও পার্টি বা মতাদর্শের হয়ে কথা বলেন, তাহলে আমাদের মনে প্রশ্ন জাগবে যে ভুল লোককে কি দেওয়া হল পুরস্কার’?
অমর্ত্যবাবুর রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বাংলার মানুষ ওনার কাছ থেকে বুদ্ধি নেবে, ওনার কথায় চলবে। উনি যদি এরকম অসফল একজন মুখ্যমন্ত্রীর কথায় প্রভাবিত হন, স্বাভাবিক ভাবেই মানুষ ভাববে ওনার সম্পর্কে’।
পাশাপাশি শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতির আমদানির জন্যও অমর্ত্য সেনকে কটাক্ষ করেন দিলীপবাবু। বলেন, ‘উনি যে মতাদর্শে বিশ্বাস করেন সেই মতাদর্শের মানুষরাই সমস্ত ক্ষেত্রে রাজনীতি শুরু করেছে। শিক্ষাক্ষেত্রকে রাজনীতির প্রাঙ্গন তৈরি করেছে। বিজেপির এত অধঃপতন হয়নি যে আমরা শিক্ষাঙ্গনকে নিয়ে রাজনীতি করবো। অমর্ত্যবাবু যেন তাঁর আসেপাশে যে লোকেরা আছেন তাদের থেকে সাবধানে থাকেন’।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জন্যও অমর্ত্য সেনকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি। বলেন, ‘অমর্ত্যবাবুদের আশীর্বাদধন্য দুর্নীতিগ্রস্ত, অত্যাচারী, স্বৈরাচারী একটা সরকার এখানে চলছে। তারা হিংসা করছে তাই এখানে শত শত লোক মারা গিয়েছে। মহিলাদেরও এখানে সম্মান নেই’।
পালটা তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘অমর্ত্য সেন নোবেল প্রাইজ জিতেছেন। তিনি নিশ্চিতভাবে বিচক্ষণ মানুষ। উনি বাংলার গর্ব, ভারতবর্ষের গর্ব। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত আগে বিশ্বভারতীকে আটকানো। বিশ্বভারতীর মতো অমর্ত্য সেনও আমাদের অহঙ্কার’।