গরুপাচারকাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডলের ওপর থেকে কার্যত হাত তুলে নিল তৃণমূল। অনুব্রতর বিরুদ্ধে এখনই কোনও কথা না বললেও তৃণমূলের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, নিজেকেই নির্দোষ প্রমাণ করতে হবে অনুব্রতকে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, তলায় তলায় অনুব্রতর পাশেই রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু সারদাকাণ্ডে গ্রেফতার নেতাদের হয়ে মুখ খোলার ফল মনে করে এবার সতর্ক হয়ে পদক্ষেপ করছে তারা।
বৃহস্পতিবার অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর বরিষ্ঠ তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘অন্যায় করলে গ্রেফতার হতে হবে। এব্যাপারে দলেরও কিছু বলার নেই। আমাদেরও কিছু বলার নেই। আমার মনে হয় যারা অন্যায় করবেন আইনের পথে তাদের শাস্তি হবেই। তার মধ্যে আর একটা কথাও বলার জায়গা নেই। যদি কেই মনে করে সে অন্যায় করেনি তাকে আইনে প্রমাণ করে আসতে হবে’।
গরুপাচারকাণ্ডে জেরার জন্য ১৭ জন IAS ও IPS-কে দিল্লিতে ডেকে পাঠাল ED
সুর কিছুটা নরম হলেও মোটের ওপর একই কথা বলেছেন তৃণমূলের আরেক বরিষ্ঠ নেতা তথা মুখপাত্র সৌগত রায়। তিনি বলেন, ‘অনুব্রতকে সিবিআই ডাকছিল। শরীর খারাপের জন্য যেতে পারেনি। এখন গ্রেফতার করেছে। ব্যাপারটা আইনে চলে গেল। অনুব্রতর আইনজীবীরা এই নিয়ে লড়বে। তবে অনুব্রত ভালো সংগঠক ছিল আমাদের দলের। ওর বিরুদ্ধে যে কী বক্তব্য তা আমরা এখনও জানি না। তার কারণ চার্জশিটে ওর নাম ছিল না। এটা জানা যাবে। তার পর দল এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে’।
দলের অবস্থান স্পষ্ট করে সৌগতবাবু বলেন, ‘পার্থ চ্যাটার্জির ব্যাপারে যেমন আমরা লজ্জিত, অনুব্রতর ব্যাপারে আমরা এখনই সেটা বলতে রাজি নই। সিবিআই তার আইনি অধিকার অনুসারে ডাকে। মানুষ সমন এড়াতেই পারে। সেজন্য অনুব্রত প্রতিবারই চিঠি দিয়ে জানিয়েছে যে ও অসুস্থ। সেটা যদি গ্রেফতারের কারণ হয় ঠিক আছে। ওরা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করুক। কিন্তু একটা অসুস্থ লোককে জোর করে এভাবে নিয়ে যাওয়াটা ঠিক নয়’।
অবৈধভাবে ভারতে রয়েছেন ২ বছর, কলকাতা থেকে গ্রেফতার থাইল্যান্ডের নাগরিক
গরুপাচারকাণ্ডে বারবার হাজিরা এড়ানোয় বৃহস্পতিবার সকালে বীরভূমের বোলপুরের নীচপট্টির বাড়ি থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁর বিরুদ্ধে গরুপাচারকাণ্ডের তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর। এর আগে গ্রেফতারির পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দায় ঝেড়ে ফেলেছিল তৃণমূল, তবে অনুব্রতর ব্যাপারে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে অবস্থান জানায়নি শাসকদল।