মেদিনীপুরের অধিকারী পরিবার নিয়ে আরও কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য। মঙ্গলবার দিঘা–শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারিত করা হয় শিশির অধিকারীকে। তার পর থেকেই নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে— ছেলে শুভেন্দুর মতো কাঁথির সাংসদও কি এবার বিজেপি–তে যাবেন? আর তা নিয়েই এদিন চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন বিজেপি–র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়।
এর আগে যখন কাঁথি পুরসভার প্রশাসক পদ থেকে শিশির–পুত্র সৌমেন্দু অধিকারীকে সরিয়ে দেওয়া হয় তার পরেই তিনি যোগ দেন বিজেপি–তে। এবার কি শিশির অধিকারীর বেলায় সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে? সেই প্রসঙ্গ এবং শিশির অধিকারীকে অপসারণের ব্যাপারে এদিন মুকুল রায় তৃণমূলকে ‘পারিবারিক রাজনৈতিক দল’ হিসেবে কটাক্ষ করে বলেন, ‘তারা তাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য না করাই ভাল।’ শিশির অধিকারী কি এবার বিজেপি–তে? মুকুলের জবাব, ‘উনি তো এসেইছেন। ওঁর ছেলে এসেছে, আবার কী! শিশিরের আসা সময়ের অপেক্ষা। উল্লেখ্য, ডিসেম্বরের শেষের দিকে শুভেন্দু দাবি করেছিলেন যে তাঁর ঘরেতেও পদ্ম ফুটবে। আর ঠিক তার পরের দিনই বিজেপি–তে যোগ দেন তাঁর ভাই সৌমেন্দু।
কলকাতায় সিমলা স্ট্রিটে স্বামী বিবেকানন্দর জন্মদিন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে এদিন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ‘ধ্বংস শুরু হয়েছে। সেই ধ্বংসের কাজকে এগিয়ে দিচ্ছে তৃণমূলের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত। আমি মনে করি, বিজেপি–র দরজা সকলের জন্য খোলা। বিজেপি–তে যাঁরা আসতে চাইবেন তাঁদের সবাইকে স্বাগত। কারণ, বিজেপি কোনও প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি নয়। এটা জনগণের সম্পত্তি। জনগণের দল। তাই জনগণের জন্য দরজা খোলা।’
এদিকে, মেদিনীপুরে গুরুত্ব বাড়ছে গিরি পরিবারের। দিঘা–শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন অখিল গিরি। কাঁথি পুর প্রশাসক বোর্ডে সদস্য করা হয়েছে অখিল–পুত্র সুপ্রকাশ গিরিকে। এদিন শিশির অধিকারীকে অপসারণ প্রসঙ্গে অখিল গিরি অভিযোগ করে বলেন, ‘পর্ষদের কোনও কাজ করেননি শিশির অধিকারী। কখনও কোনও বৈঠকও ডাকেননি তিনি।’ তাঁর দাবি, ‘শুভেন্দুর বিজেপি–তে যোগ দেওয়ার জন্য এই অপসারণ নয়।’
শিশির অধিকারীকে এই বিশেষ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গে এদিন পুর ও নগরোন্নয়মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘ছেলের কাজে লজ্জিত শিশিরদা। অসুস্থ ছিলেন, তাই অব্যাহতি চেয়েছেন।’ তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, ‘শিশিরবাবুর বয়স হওয়ায় ছোটাছুটিতে অসুবিধা হচ্ছে তাঁর। বয়স হয়েছে। তাই এটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত।’ শিশির অধিকারীর অপসারণ প্রসঙ্গে এদিন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘দীর্ঘদিন কোনও পদে থাকলে তো রদবদল হয়। এটা তো সংসদীয় গণতন্ত্রের এক প্রথা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় আমারও অনেকবার দফতর বদল হয়েছে। তাতে তো আমি কখনও অপমানিত বোধ করিনি। আর অখিল গিরি তো আমেরিকার নয়!’